আতাউর রহমান রাজধানীতে বাসায় ঢুকে হত্যা করা হয়েছে ব্লগার নিলাদ্রী চ্যাটার্জীকে। যিনি নিলয় নীল নামে লেখালেখি করতেন। শুক্রবার দিনেদুপুরে গোড়ানের পাঁচতলা একটি বাড়ির ৫ম তলার ভাড়া বাসায় তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই সময় নিলয়ের স্ত্রী আশা মনি ও তার ছোট বোন বাসায় উপস্থিত থাকলেও তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মী করে রাখে খুনিরা। মাত্র তিন মিনিটের এ হত্যা মিশনে সরাসরি চার খুনি অংশ নেয়। হত্যার পর বাসা থেকে একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে খুনিরা। নিলয় হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন তার স্ত্রী আশা মনি ও শ্যালিকা ইশরাত তন্নী। দুজনেই বলছেন, বাসায় মোট চার খুনি ঢুকেছিল। মাত্র তিন থেকে চার মিনিটেই নিলয়কে হত্যা করে তারা চলে যায়। হত্যার পর তারা ‘আল্লাহু আকবর’ বলে উচ্চস্বরে ধ্বনি করে। স্ত্রী আশা মনি বলেন, নিলয় দুপুর একটার দিকে বাসায় ঢুকে গোসল করে শোবার ঘরে বসে ছিল। এর ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর বাইরে থেকে কড়া নাড়ার শব্দ পেয়ে তিনি দরজা খুলেন দেন। ওই সময় দ্রুতই এক যুবক বাসা ভাড়া নেবে বলে ভেতরে ঢুকে পড়ে। আশা মনি জানান, আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ বছরের ওই যুবকের পরনে কালো টিশার্ট ও জিন্সের প্যান্ট ছিল। তার কাঁধে একটি ব্যাগ ছিল। সে ভাড়া নেবে বলে ভেতরে ঢুকে পড়ে। কে বাসা ভাড়া দেবে জিজ্ঞেস করলেও কোন জবাব না দিয়ে শোবার ঘরের দিকে চলে যায়। ওই যুবক মোবাইল ফোনে চাপ দিতেই আরও তিন যুবক বাসায় ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্র ও চাপাতি ছিল। প্যান্ট ও শার্ট পরা প্রায় একই বয়সের ওই যুবকদের মধ্যে একজনের মুখে দাঁড়ি ছিল। আশা মনি বলেন, বাসায় ঢুকেই দাঁড়িওয়ালা যুবক তার স্বামীকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। তিনি চিৎকার দিলে আগে প্রবেশ করা যুবক তাকে পিস্তল ঠেকিয়ে বারান্দায় নিয়ে আটকে রাখে। তার ছোট বোন ইশরাত তন্নীকে রান্নঘরে আটকে রাখে। বিলাপ করে আশামনি বলেন, তার সামনেই স্বামীকে কোপানো হয়। সে বাঁচার জন্য হাত দিয়ে বাধা দিলে তার আঙুলগুলো কেটে যায়। তিনি বারান্দা থেকে চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। মাত্র তিন থেকে চার মিনিটেই তার স্বামীকে হত্যা করে চলে যায় খুনিরা। ২৭ বছর বয়সী নিলয় যুদ্ধারাধীদের বিচারের দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এ ছাড়া আরডিসি নামের বেসরকারী একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করতেন।