ঢাকা, মার্চ ২৯, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, স্থানীয় সময়: ১১:১০:০১

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকারের পাশাপাশি জনগণেরও নজরদারি চাই : সংসদে প্রধানমন্ত্রী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও উপনেতা আনিসুল ইসলাম রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী

নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে নির্বাচন বর্জন : হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ

| ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ | Saturday, May 26, 2018

নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে নির্বাচন বর্জন

যে রাজনৈতিক দল দেশ পরিচালনার ক্ষমতা থাকে, তাদের হাতেই সংখ্যালঘুরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকায় হয় এবং সম্পত্তি দখল হয়। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ভোট কাজে লাগাতে সকল রাজনৈতিক দলই নানাভাবে তৎপর হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ করেছেন বিশিষ্টজনরা। এজন্য আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিধান নিশ্চিতসহ পাঁচ দফা দাবী দিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। এসব দাবি বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়।বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ প্রতিষ্ঠার তিন দশক উপলক্ষে আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনের তিন দশক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনরা এসব কথা বলেন এবং পরিষদের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।

আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, সিপিবির সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদের সাধারন সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, প্রবীন রাজনীতিক পঙ্কজ দেবনাথ প্রমূখ। মূল প্রবন্ধ ও দাবী উপস্থাপন করেন পরিষদের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।

আলোচনায় কমরেড খালেকুজ্জামান বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর হলো। গত ৩০ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ১৫ বছর, বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার মিলে ১৫ বছর। এই ১৫ বছরে হিন্দুদের শত্রু সম্পত্তি ও অর্পিত সম্পত্তির বেশীরভাগ এখন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হাতে। তারা আজকেই সব সম্পত্তি ছেড়ে দেশ পরিচালনা করুক, হিন্দুদের কোনো সমস্যা হবে না। এখনো ক্ষমতাসীনদের দাপটে হিন্দুরা দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করে।

ড. মিজানুর রহমান বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর সময় সময় বিভিন্ন নামে নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। অতীতে কারা সংখালঘুদের ওপর নির্যাতন করেছে তা সকলেই জানেন। বর্তমান সরকার তাদের ব্যাপারে আজও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কেন এটি প্রশ্ন স্বাপেক্ষ বিষয়। বর্তমান সরকারেও আমলেও যারা নির্যাতন করেছে তাদের বিষয়ে সরকার কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। যারা ধর্মের দোহায় দিয়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন করে, সে সব যুদ্ধাপরাধী দলকে কেন এখন পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়নি।

মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, স্বাধীনতার পর দেশ পরিচালনায় বেশীরভাগ সময় ছিলেন পাকিস্তানিদেরর প্রেতাত্মারা। তারা এই দেশে মানুষের সম-অধিকারে বিশ্বাস করে না। ধর্মীয স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনা। ফলে তাদের হাতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা উল্লেখযোগ্য।

পাাঁচ দফা দাবী তুলে ধরেন রানা দাশগুপ্ত বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল বা জোট আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে এমন কাউকে মনোনয়ন দেবে না যারা অতীতে বা বর্তমানে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে বা রাজনৈতিক নেতৃত্বে থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী, স্বার্থবিরোধী কোনো প্রকার কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বা আছেন, এমন কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া হলে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী যে সব নির্বাচনী এলাকায় তাদের ভোটদানে বিরত থাকবে বা ভোট বর্জন করবে। আদিবাসীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণসহ জনসংখ্যার আনুপাতির হারে সংসদে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণে রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহকে দায়িত্ব নিতে হবে।

নির্বাচনের পূর্বাপর ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনে ধর্ম ও সামপ্রদায়িকতার ব্যবহার, মন্দির, মসজিদ, গির্জা, প্যাগোডাসহ ধর্মীয় সকল উপাসনালয়কে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার, নির্বাচনী সভাসমূহে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান বা কোরনারূপ প্রচার নিষিদ্ধকরণের পাশাপাশি তা ভঙ্গের দায়ে সরাসরি প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলসহ তাকে এক বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনি আইনের যুগোপযোগী সংস্কার করতে হবে। নির্বাচনের আগেই সরকারকে সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠন, বর্ণবৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন এবং পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের বাস্তবায়নসহ পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।