ঢাকা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১২:১৪:৫৯

পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শংকর সাহার বিরূদ্ধে জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, ব্লেকমেইলিংয়ের অভিযোগ

| ১৮ আষাঢ় ১৪২২ | Thursday, July 2, 2015

Published on Tuesday, 30 June 2015
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট: নারায়ণগঞ্জের পুজা কমিটির নেতা শংকর সাহার বিরূদ্ধে ওসমান পরিবারের নাম ভাঙিয়ে জালিয়াতি, চাঁদাবাজি, ব্লেকমেইলিংয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন সভা-সমাবেশে স্থানীয় ডিসি, এসপি বা রাজনৈনতিক নেতাদের সঙ্গে ফটোশেসনের দৃশ্য শংকর সাহার প্রতারণার অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।
ভূক্তভোগিরা অভিযোগ করেন, এসব ছবি স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করে শংকর সাহা সাধারণ লোকজনদের সঙ্গে ব্লেকমেইলিং করেন। এতোদিন ভয়ে মুখ না খুললেও তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ লোকজন এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ সালিশ বা মামলার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
টাকার খনি হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বি দাস রোড (ডালপট্টি ও নিতাইগঞ্জ) এলাকার মূর্তিমান আতঙ্ক শংকর সাহার আরেকটি বড় পরিচয় তিনি আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট খোকন সাহার বন্ধু ও এক শ্রেণীর পুলিশের সোর্স। গোপন অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই এলাকা থেকেই প্রতিমাসে তার চাঁদা আদায়ের পরিমান প্রায় লাখ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বি দাস রোডের জনৈক ব্যাবসায়ী জানান, শংকর সাহা সম্প্রতি সংখ্যালঘু এক প্রতিবেশির কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা ‘মাসুল’ নিয়ে বিনা উৎপাতে তার জায়গায় ৬ তলা বিল্ডিং নির্মাণ করতে ‘ছাড়’ দিয়েছেন। এই বিপুল অংকের লেনদেন গোপনে হলেও শংকর সাহার অতি লোভের ফলে এ কেলেংকারী ফাঁস হয়ে পড়ে।
ভূক্তভোগীদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে জানান, ২০১২ সালের জানুয়ারী থেকে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ৩ ধাপে এলাকার বিতর্কিত জনৈক হাসেম হাজীর মধ্যস্থতায় এই ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। তবে, বিল্ডিংয়ের আস্তরনের কাজ ধরার সময় শংকর সাহা আরো ১০ লাখ টাকা দাবী করলে দেখা দেয় বিপত্তি। ফাঁস হয়ে পড়ে ৫০ লাখ কেলেংকারীর ঘটনা।
এ ব্যাপারে এলাকার জেলা ডাল (ভূষামাল) ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট সুলতান উদ্দিন নান্নুর সঙ্গে মোবাইল ফোনে (০১৭১৩০০৭১৬৪) যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
শংকর সাহার বিরুদ্ধে ব্যাংক জালিয়তির অভিযোগও আমাদের হস্তগত হয়েছে। শংকর চন্দ্র সাহা নিজের ছবি ব্যবহার করে নিজে সুরেন্দ্র চন্দ্র সাহা সেজে পিতা সুরেন্দ্র চন্দ্র সাহার খরিদা ১৫ শতাংশ নাল জমি নারায়ণগঞ্জের চাষাড়াস্থ সোনালী ব্যাংকের কর্পোরেট শাখায় জনৈক কাজল সাহার মালিকানাধীন মেসার্স সাহা ফ্লাওয়ার মিলের অনকুলে থার্ড পার্টি মরগেজ দিয়ে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। ঘটনাটি ফাঁস হয় গত ২০০৪ সালে অর্থঋণ আইন আদালতের একটি নিলাম দরপত্র বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় প্রকাশের পর। ওই বিজ্ঞপ্তির তফসিল ‘ক’ এর ১ নং এ উল্লেখিত জমিটির মালিক মৃত সুরেন্দ্র চন্দ্র সাহা। থানা-ফতুল্লা, সাবরেজিঃ অফিস ও জেলা -নারায়ণগঞ্জ, জে.এল নং-২০১, হালে-১৫, মৌজা- কুতুবপুর, খতিয়ান সি,এস, ৫৫, এস,এ, ৭৪, মিউটেশন - ১২০৫, দাগ নং- সি,এস-৬, এন,এ - ৪৯৮, জমির পরিমান ১৫ (পনের) শতাংশ।
প্রজন্ম প্রত্যাশা পূজা উদযাপন কমিটির নাম ভাঙিয়েও প্রতি বছর শংকর সাহা কম করে হলেও ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। দূর্গা পূজার সময় তার এই ‘পূজা বানিজ্য’ শুরু হয়। প্রজন্ম প্রত্যাশা পূজা উদযাপন কমিটির তিনি একাই নেতা। বাকীসবাই কাগুজে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে বি, কে,রোডস্থ “নিতাইগঞ্জ পূজা কমিটির’ নেতা থাকাকালে পূজা কমিটির তহবিল তছরুপের অভিযোগে শংকর চন্দ্র সাহাকে ওই কমিটি থেকে বহিস্কার করা হয়। ওখান থেকে বিতাড়িত হয়ে বহুল বিতর্কিত শংকর চন্দ্র সাহা বি, দাস, রোড ( ডালপট্টি) আর,কে,দাস রোডে “প্রজন্ম প্রত্যাশা”র ব্যানারে নতুন করে দূর্গা পুজানুষ্ঠান চালু করেন।
তথ্য সূত্র-http://www.livenarayanganj.com