ছবি : সংগৃহীত
ভারতের মুম্বাইয়ে ধর্ষণের শিকার ১৩ বছরের এক কিশোরীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছেন দেশটির উচ্চ আদালত। গতকাল বুধবার আদালত এ রায় দেওয়ার পর কিশোরীর আইনজীবী জানিয়েছেন, আগামী শুক্রবার তার গর্ভপাত করানো হবে।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ গর্ভপাতের এ রায় দিয়েছেন।
ভারতের আইন অনুযায়ী, গর্ভবতী ঝুঁকিতে থাকলে কেবল তখনই ২০ সপ্তাহ পর তিনি গর্ভপাত করাতে পারবেন। ১৩ বছর বয়সী ওই কিশোরী বর্তমানে ৩২ সপ্তাহের গর্ভবতী।
খবরে বলা হয়, এই কিশোরীর বাবা-মা তাদের মেয়েকে মোটা হতে দেখে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। গত ৯ আগস্ট চিকিৎসকরা জানান, তাদের মেয়ে স্থূলতায় আক্রান্ত নয়, সে গর্ভবতী। পরে কিশোরী অভিযোগ করে, তার বাবার সহকর্মী তাকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের অভিযোগে সেই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তবে মুম্বাইয়ের জে জে হাসপাতালের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গর্ভপাতে কিশোরীর মৃত্যুঝুঁকি এখন গর্ভপাত করালেও যেমন থাকবে, পরবর্তী সময়ে করালেও একই থাকবে।
ভ্রুণ যাতে আরেকটু বড়ো হতে পারে সেজন্য কিশোরীকে দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে পরবর্তী সময়ে মানসিক আঘাত এড়াতে তাৎক্ষণিক গর্ভপাতের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
১৩ বছর বয়সী ধর্ষিত এই কিশোরীর ব্যাপারটি এমন এক সময় আলোচনায় আসল, যখন কিছুদিন আগে ভারতেরই চণ্ডীগড়ে ধর্ষণের শিকার ১০ বছরের আরেক কিশোরী সন্তান জন্ম দিয়েছে। সেই কিশোরীও ৩২ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিল। কিন্তু চিকিৎসক দল গর্ভপাত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দিলে, সে গর্ভপাত করাতে অস্বীকৃতি জানায়।
গত মে মাসে হরিয়ানা রাজ্যে ১০ বছরের আরো একজন ধর্ষিতা কিশোরীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছিলেন আদালত। যেখানে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে মেয়েটির সৎবাবার বিরুদ্ধে।
শিশুদের নিয়ে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, ভারতে প্রতি ১৫৫ মিনিটে ১৬ বছরের নিচের একজন কিশোরী এবং প্রতি ১৩ ঘণ্টায় ১০ বছরের নিচের একজন কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়। ২০১৫ সালে ভারতে ১০ হাজারের বেশি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে।