দেশের কোন জেলায় দারিদ্র্য পরিস্থিতি কেমন, তা নিয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো বাংলাদেশ দারিদ্র্য মানচিত্রে। এতে বলা হয়েছে, দেশের কুষ্টিয়া জেলায় গরিব মানুষ সবচেয়ে কম। আর সবচেয়ে বেশি গরিব মানুষ বাস করে কুড়িগ্রাম জেলায়। বুধবার দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) যৌথভাবে এই মানচিত্র প্রকাশ করে। দারিদ্র্য মানচিত্রের তথ্যানুযায়ী, সামগ্রিকভাবে দেশে দারিদ্র্যের হার ৩০.৭ শতাংশ। কিন্তু কুষ্টিয়া জেলায় এ হার মাত্র ৩.৬ শতাংশ। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে দারিদ্র্য মানচিত্রে কুষ্টিয়ার এ চিত্র আশাব্যঞ্জক হলেও কুড়িগ্রামের চিত্র খুবই হতাশাজনক। জেলা ভিত্তিক হিসাবে কুড়িগ্রাম চরম দারিদ্র্যপীড়িত জেলা। এ জেলায় ৬৩.৭ শতাংশ মানুষ গরিব (দারিদ্র্যের হার)। এ ছাড়া বিভাগ ভিত্তিক হিসাবে দেশের ঢাকা বিভাগে রয়েছে সবচেয়ে বেশি গরিব মানুষ। এ বিভাগে দারিদ্র্যের হার ৩২.৩ শতাংশ। দারিদ্র মানচিত্রের তথ্য মতে, ঢাকা বিভাগে বেশি মানুষ করে বিধায় এ বিভাগে গরিব মানুষেরও সংখ্যাও বেশি। অন্যদিকে সিলেট বিভাগে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে কম, মাত্র ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। বলা হয়েছে, এ বিভাগে তুলনামূলকভাবে কম মানুষ বাস করে, তাই এখানে দারিদ্র্যের হারও কম। দারিদ্র্য মানচিত্র প্রকাশ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দারিদ্র্য মোকাবিলায় সরকার সঠিক পথে এগোচ্ছে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর উদ্দেশে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় ঝুলে থাকতে চাই না। দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য আপনারা আমাদের সহায়তা করুন, সরকারকে ক্ষমতায় স্থায়ী করার জন্য নয়। এদিকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব নজিবুর রহমান জানান, তারা দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরির কাজ শুরু করেছেন । দারিদ্র্য মানচিত্র এ কাজে তাদের সহায়তা করবে। ডব্লিউএফপির বাংলাদেশবিষয়ক পরিচালক ক্রিস্টা রেডার বলেন, দারিদ্র্য মানচিত্রই চূড়ান্ত কিছু নয়। তবে এটি দারিদ্র্য দূরীকরণে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে। ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত করার জন্য দারিদ্র্য মানচিত্র সরকারকে সহায়তা করবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বক্তারা।