ঢাকা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৬:২৩:১৪

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের সাংস্কৃতিক সম্পৃক্ততার আহ্বান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর সংসদে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে স্বতন্ত্র সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প বাস্তবায়নে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে পিপিপি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগমন স্বচ্ছ নির্বাচনে সহায়ক : তথ্যমন্ত্রী

দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যে কোন মূল্যে ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত প্রতিহত করবো, ইনশায়াল্লাহ : জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী

| ১৯ আষাঢ় ১৪২৩ | Sunday, July 3, 2016

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ ষড়যন্ত্রকারীদের কৌশল বাস্তবায়িত হতে দেবেন না। দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যে কোন মূল্যে আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত প্রতিহত করবো, ইনশায়াল্লাহ।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের নির্মূল করে আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করবোই, ইনশায়াল্লরাহ। কোন ষড়যন্ত্রই আমাদের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করতে পারবে না। আসুন, সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করি।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষনে এই কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমাদের উপর আস্থা রাখুন। ত্রিশ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব আমরা যে কোন মূল্যে রক্ষা করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, গতরাতে কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী রাজধানীর গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে হামলা চালায়। সেখান অবস্থানরত নিরস্ত্র, বেসামরিক নাগরিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং হত্যাকান্ড শুরু করে। পবিত্র রমজান মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা যখন এশা ও তারাবির নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন এই হামলা ধর্ম ও মানবিকতাকে অবমাননা করেছে। এই বর্বর ও কাপুরুষোচিত আক্রমণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশে নজিরবিহীন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হামলার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই আমার সরকার দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেয়। পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে পৌঁছায় এবং উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরবর্তী সময়ে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর কমান্ডোরা অভিযানে অংশগ্রহণ করে আজ সকালে জিম্মিদের মুক্ত করে আনে।
৬ জন হামলাকারী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। তিনজন বিদেশিসহ ১৩ জন জিম্মিকে আমরা অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সমর্থ হই-এই কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অভিযানে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ারসার্ভিসসহ অন্যান্য বাহিনীর যেসব সদস্য অংশ নিয়েছেন, আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
বিশ্বসম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ যারা বাংলাদেশের সাথে একাত্মতা ও সংহতি প্রকাশ করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ভাষনে শেখ হাসিনা বলেন,এই নৃশংস হামলায় ২জন পুলিশ সদস্য নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। নিহত পুলিশ সদস্য এবং সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহতদের আত্মার তিনি মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। আহতরা দ্রুত আরোগ্যলাভ করুন- মহান আল্লাহ-তায়ালার কাছে এই প্রার্থনা করেন।
তিনি বলেন,নিহতদের স্মরণে দুইদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছি। বাংলাদেশ যখন একটি আত্ম-মর্যাদাশীল এবং আত্ম-নির্ভরশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তখন দেশী-বিদেশী একটি চক্র বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেন,অস্ত্রের মুখে নিরীহ সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে এরা দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করাতে চায়। গণতান্ত্রিক পথে মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়ে এরা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। কোমলমতি যুবক-কিশোরদের ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে মানুষ হত্যা করছে।
প্রধানমন্ত্রী মুষ্টিমেয় বিপথগামী সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন,আমি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সন্ত্রাস-বিরোধী কমিটি, কম্যুনিটি পুলিশ এবং সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে সন্ত্রাস মোকাবিলায় এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, যেসব কোমলমতি যুবক-কিশোর বিপথে পরিচালিত হচ্ছেন, যারা তাদের মদদ দিচ্ছেন, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- মানুষকে হত্যা করে কী অর্জন করতে চান? ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামের নামে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। আমাদের পবিত্র ধর্মকে আপনারা কলুষিত করবেন না।
অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনার সন্তানকে সুশিক্ষা দিন। তারা যাতে বিপথে না যায় সেদিকে নজর রাখুন। বিপথগামীদের প্রতি আহ্বান আপনারা সঠিক পথে ফিরে আসুন। ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত রাখুন।
তিনি বলেন,সন্ত্রাসীদের সমূলে নির্মুল করে আমরা বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত করবই, ইনশাআল্লাহ। কোন ষড়যন্ত্রই আমাদের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করতে পারবে না। আসুন, আমরা সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় একযোগে কাজ করি। আপনারা ভাল থাকুন,সুস্থ থাকুন।