ঢাকা, এপ্রিল ১৮, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১২:১৩:১২

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের সাংস্কৃতিক সম্পৃক্ততার আহ্বান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর সংসদে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে স্বতন্ত্র সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প বাস্তবায়নে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে পিপিপি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগমন স্বচ্ছ নির্বাচনে সহায়ক : তথ্যমন্ত্রী

তদন্ত ও প্রসিকিউশন আবারও প্রশ্নবিদ্ধ

| ৫ আশ্বিন ১৪২১ | Saturday, September 20, 2014

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দিলেও আপিল বিভাগে সেই সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ড হওয়ায় একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের দুর্বলতা-অদক্ষতার বিষয়টি আবারও আলোচিত হচ্ছে। ৪৩ বছর আগে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগগুলো প্রমাণে এই দুই সংস্থার দক্ষতা-যোগ্যতা নিয়ে এর আগেও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারসংশ্লিষ্টরা। ট্রাইব্যুনাল আটটি অভিযোগে সাঈদীকে দোষী সাব্যস্ত করলেও গত বুধবার এর তিনটিতে তাঁকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এ ছাড়া ইব্রাহিম কুট্টি হত্যার অভিযোগে সাঈদীকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগে টেকেনি। এসব কারণে আবারও প্রশ্ন উঠেছে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার কার্যক্রম নিয়ে।আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, প্রসিকিউশনে পরিবর্তন আনা হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও তদন্ত ও মামলা পরিচালনায় প্রসিকিউশনের দুর্বলতার কথা বলেছেন। এ অবস্থায় প্রসিকিউশন ঢেলে সাজানোর দাবি জোরালো হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের অদক্ষতার কারণে অপরাধীদের যে পরিমাণ শাস্তি ভুক্তভোগীরা প্রত্যাশা করেন, তা হচ্ছে না। এমনকি বিচারকাজেও বিলম্ব ঘটছে।গতকাল বৃহস্পতিবারও জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সমাপনী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার দুর্বলতার কথা তুলে ধরেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে একপর্যায়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম প্রসিকিউশনকে লক্ষ্য করে ড. তুরিন আফরোজকে বলেন, ‘আপনারা মামলার তদন্ত ঠিকমতো করবেন না; সাক্ষ্যগ্রহণ, প্রমাণাদি ঠিকমতো না দিয়ে প্রমাণ করার ভার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিবেন। ফৌজদারি মামলায় আসামিকে অপরাধী প্রমাণের ভার তো বিচারকদের না। এটা প্রসিকিউশন ও তদন্তকারীর দায়িত্ব।’ জামায়াত নেতা সাঈদীকে আপিল বিভাগের দেওয়া সাজার বিষয়ে যে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে তা নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে এসব বলেন ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান।সাঈদীর সাজা কমে যাওয়ার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সরাসরি তদন্ত সংস্থার গাফিলতিকে দায়ী করেছেন। সেই সঙ্গে প্রসিকিউটরদের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। গত বুধবার সাঈদীর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের রায়ের পর তিনি এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।সাঈদীর মামলায় দুর্বলতা থাকার কথা স্বীকার করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সদস্য সানাউল হক গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাঈদীর মামলাটিই ছিল আমাদের সামনে প্রথম মামলা। ৪৩ বছর আগের অপরাধের তদন্ত কোন প্রক্রিয়ায় করা হবে তা নিয়ে প্রথমে জড়তা বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। এ কারণে এ মামলাটির তদন্তে ত্রুটি থাকতেই পারে।’সাঈদীর মামলার রায়ের পর বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক প্রসিকিউশন নিয়ে বলেন, ‘রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি না দেখে কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। তবে প্রসিকিউশন টিমের যা অবস্থা, সেখানে পরিবর্তন আসা উচিত।’ তিনি বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালে কিছু মামলা চলছে, কিছু রায় অপেক্ষমাণ আছে। এ অবস্থায় প্রসিকিউশন টিমের যেন কোনো অসুবিধা না হয় এ জন্য আমি কোনো পরিবর্তন আনিনি।’ তবে দ্রুত এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হারুন হাবীব গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাঈদীর আপিলের রায়টি পূর্ণাঙ্গ প্রকাশ করা হলে এই রায় সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাননীয় বিচারকরা নানা সময় তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের দুর্বলতার কথা বলেছেন। এমনকি প্রসিকিউশনকে আদালত ধমক দিয়েছেন অসংখ্যবার।’ তিনি বলেন, এতে স্পষ্ট যে তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনের দুর্বলতা বেশ চোখে পড়ার মতো। প্রসিকিউশনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সুযোগ আসামিপক্ষ কাজে লাগিয়ে তারা লাভবান হচ্ছে। এ ছাড়া তদন্ত সংস্থার দুর্বল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কারণে অভিযোগগুলো শক্তিশালীভাবে প্রমাণ করতে পারেনি প্রসিকিউশন। ফলে ওই অভিযোগগুলো থেকে আসামিরা খালাসও পাচ্ছে। সাঈদীর মামলার ব্যাপারেও এমনটি হয়ে থাকতে পারে। এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সর্বোপরি তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশনকে আরো শক্তিশালী না করতে পারলে অপরাধীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে না। আর শহীদ পরিবার ও একাত্তরের ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হবে।প্রসিকিউশনের নানা কর্মকাণ্ডে তাদের দুর্বলতা ও অদক্ষতা ফুটে উঠেছে বলে দাবি করেছেন ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক ও গবেষক শাহরিয়ার কবির। সম্প্রতি তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রসিকিউশনের দুর্বলতা বরাবরই লক্ষণীয়। চার বছর ধরেই ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি এই প্রসিকিউশনে দক্ষ, বলিষ্ঠ ও চৌকস আইনজীবী নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে বলে আসছে। প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার যে ভুলগুলো হচ্ছে তা ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি সরকারকে দেখিয়ে দিচ্ছে। নির্মূল কমিটি বা অন্য কোনো ব্যক্তির এই সমস্যা সংশোধন করার কোনো সুযোগ নেই। সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে এই সংশোধনের। তা ছাড়া দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নূজহাত চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার কার্যক্রমে দেশের মানুষ শুরু থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে। এই দুই সংস্থার ওপর দেশের ১৬ কোটি মানুষের আশা-ভরসা। এই বিচারের সফলতা-ব্যর্থতা নির্ভর করছে তাদের ওপর। কিন্তু ইতিমধ্যে প্রসিকিউশনের দুর্বলতা ও তদন্ত সংস্থার তদন্তে দুর্বলতা নিয়ে স্বয়ং আদালত প্রশ্ন তুলেছেন। সেই অদক্ষতা ও দুর্বলতার প্রভাব সাঈদীর মামলার ওপর পড়েছে বলে অনেকে বলছে। এমনকি নানা সময় প্রসিকিউশনের কারো বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের মতো অভিযোগও উঠেছে। তাদের দক্ষতা নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন তুলেছে আদালত ও গণমাধ্যম। তাই এটি স্পষ্ট যে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার অদক্ষতার কারণে অনেক অভিযোগ আদালতে সঠিকভাবে প্রমাণিত হচ্ছে না। ফলে যে পরিমাণ শাস্তি ভুক্তভোগীরা প্রত্যাশা করে তা বাস্তবে হচ্ছে না। তিনি বলেন, তাই সরকারের উচিত এসব বিষয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর পদক্ষেপ নিয়ে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থাকে অধিকতর শক্তিশালী করা।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী প্রসিকিউশনের দুর্বলতা ও অদক্ষতার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি যে কয়টি মামলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ছিলাম সেগুলো সুন্দর, সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়েছে। এগুলোতে প্রসিকিউশন বা তদন্ত সংস্থার কোনো দুর্বলতা চোখে পড়ে না। প্রসিকিউটর হায়দার আলী ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর মামলা পরিচালনার কাজে জড়িত ছিলেন।প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার দুর্বলতা ও অদক্ষতার কথা অস্বীকার করেছেন ট্রাইব্যুনালের আরেক জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীও। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যে আইনে বিচার হচ্ছে এটি একটি নতুন আইন। এ আইনে বিচারকাজ পরিচালনার শুরুর দিকে প্রসিকিউটরদের একটু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে মামলার বিচারকাজে সেগুলো তেমন প্রভাব ফেলেনি। অনেক মামলার রায় হয়েছে ট্রাইব্যুনালে। সেগুলোতে প্রসিকিউশনের ভালো অবস্থানের কারণেই ট্রাইব্যুনাল থেকে অশানুরূপ রায় পেয়েছি আমরা।’প্রসিকিউশনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে আসামিপক্ষ কোনো সুযোগ নিচ্ছে কি না এ বিষয়ে মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রসিকিউশনে কোনো কোন্দল নেই। হয়তো কোনো বিষয়ে ভিন্নমত থাকতে পারে। তিনি দাবি করেন, তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন দক্ষ ও সুন্দরভাবে কাজ করছে।সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কোনো বিচারে অপরাধ প্রমাণের দায়িত্ব যারা অভিযোগ করে তাদের ওপর। তাই প্রসিকিউশনের আইনজীবীদের অবশ্যই আসামিপক্ষের আইনজীবীদের চেয়ে কয়েকগুণ দক্ষ, অভিজ্ঞ ও চৌকস হতে হবে। ট্রাইব্যুনালের দুই-একজন প্রসিকিউটর ছাড়া বেশির ভাগই অনভিজ্ঞ প্রমাণিত হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালের মর্যাদা হাইকোর্টের সমান। আর সেখানে প্রসিকিউশনের বেশির ভাগ আইনজীবীর হাইকোর্টের অনুমোদন থাকলেও তাঁরা নিম্ন আদালতে ওকালতি করা। এই ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরদের দুর্বলতা আর নানা সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভুল করা তাঁদের ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত তা আমার জানা নেই। এসব অদক্ষতা ও দুর্বলতার প্রভাব সাঈদীর মামলার ওপর পড়ে থাকতে পারে। ফলে সাঈদীকে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া দণ্ড আপিল বিভাগ কমিয়েছেন।’ তিনি আরো বলেন, প্রসিকিউশনে অবশ্যই অভিজ্ঞ ও নিবেদিতপ্রাণ আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীদের সহায়তা নিতে পারে প্রসিকিউশন। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ দরকার।এর আগে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম ও বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষস্থানীয় চার আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দাখিল করা ফরমাল চার্জ ট্রাইব্যুনাল প্রথম দফায় ফেরত দিয়েছিলেন সেগুলো সুবিন্যস্তভাবে লেখা না হওয়ায়। এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। ২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে না নিয়ে ফেরত দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারির মধ্যে নতুন করে অভিযোগ দাখিল করতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। গোলাম আযমের বিরুদ্ধে এর আগে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে আদেশের ধার্য দিন ছিল ২০১১ সালের ২৬ ডিসেম্বর। সেদিন ট্রাইব্যুনাল ওই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির কাছে ফেরত পাঠানোর এবং তা পদ্ধতি অনুযায়ী ৫ জানুয়ারির মধ্যে পুনঃ দাখিলের আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, গোলাম আযমের বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জবানবন্দি ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক নথি পর্যবেক্ষণ করে ট্রাইব্যুনাল মনে করেন, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ অগোছালোভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। অভিযোগগুলো সুবিন্যস্ত নয় এবং শ্রেণিভুক্ত করা হয়নি।জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দাখিল করা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ সুবিন্যস্ত ও যথাযথ না হওয়ায় ২০১১ সালের ২৮ ডিসেম্বর এবং ২০১২ সালের ১১ জানুয়ারি দুই দফা ফিরিয়ে দেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের ব্যর্থতার কারণেই এমনটি ঘটে। প্রসিকিউশনের এক রিভিউ পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১৯ জুন কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগনামায় সংশোধনী আনেন ট্রাইব্যুনাল। তাঁর বিরুদ্ধে গঠন করা আদেশের ৭ নম্বর অভিযোগে ‘উপস্থিত থেকে হত্যা করিয়েছেন’-এর স্থলে ‘নির্দেশে’ এবং অন্য একটি অভিযোগে ‘হত্যা করেছেন’-এর স্থলে ‘হত্যা অথবা হত্যায় সহযোগিতা করেছেন’ বলে সংশোধনী আনা হয়।সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষী হাজির করতে বারবার ব্যর্থ হয় প্রসিকিউশন। আর কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলায় যা ঘটে তা নিয়ে তোলপাড় হয় দেশজুড়ে। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির কারণে ২০১২ সালের ১৪ মার্চ বুধবার ক্ষোভ প্রকাশ করেন ট্রাইব্যুনাল। আর এ কারণে তদন্ত কর্মকর্তাকে তলবও করা হয়।জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলায় গত ১ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন রাষ্ট্রপক্ষের সাত নম্বর সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম। জবানবন্দির কোথাও তিনি এ টি এম আজহারের নাম উল্লেখ করেননি। ফলে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ওই সাক্ষীকে বৈরী ঘোষণা করার জন্য ট্রাইব্যুনালে লিখিত আবেদন করা হয়। ওই আবেদনে সাক্ষীকে বৈরী ঘোষণা না চেয়ে তাঁর জবানবন্দি বৈরী ঘোষণার কথা উল্লেখ করা হয়। একজন প্রসিকিউটর ট্রাইব্যুনালে আবেদনটি পড়া শুরু করেন। এ অবস্থায় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আবেদনের বিষয়বস্তু নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ট্রাইব্যুনাল ওই আবেদনটি সংশোধন করার জন্য প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দিলে দাঁড়ানো অবস্থায় জমা দেওয়া আবেদনের কপিগুলো হাতে লিখে সংশোধন করেন প্রসিকিউটর। ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আইনজীবী, সাংবাদিক ও পরিদর্শকদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন ওঠে। আসামিপক্ষের আইনজীবীদেরও এ নিয়ে হাসাহাসি করতে দেখা যায়। - See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2014/09/19/130556#sthash.ekave9hT.dpuf