তথ্য সূত্র–শনিবার, ১২-সেপ্টেম্বর-২০১৫ ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন-http://banglamail24.com/news/106216
স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সাথে আত্মীয়তার সুযোগে ‘ধরাকে সরা জ্ঞান’ করা স্থানীয় সরকার মন্ত্রী প্রকৌশলী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করে আজ শুধু জনধিকৃতই নন, কি দেশে কি প্রবাসে সর্বত্রই ব্যাপক সমালোচিত। ঢাকায় সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়াই তুলে নিয়ে জেলে ভরার পর সর্বশেষ বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তের চোখ তুলে নেয়ার প্রকাশ্য হুমকি দিয়ে চরম বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও।
যুদ্ধাপরাধী ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্তের অপরাধ তিনি প্রতাপশালী মন্ত্রীর মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছেন, দেশবাসীর সামনে পরিষ্কার করেছেন খন্দকার মোশাররফ যেভাবে তার নিজ জেলা ফরিদপুরে হিন্দু সম্পত্তি জবরদখল করেছেন। সরকারের একজন মন্ত্রী প্রকাশ্যে তার দেশের কোনো নাগরিকের চোখ তুলে নেয়ার হুমকি দেয়া সত্ত্বেও কি করে এখনো বহাল তবিয়তে, তার জবাব না পেয়ে অনেকেই এখন প্রধানমন্ত্রীর স্বজনপ্রীতিকে দায়ী করতে শুরু করেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, হুমকি-ধমকি দিতে খন্দকার মোশাররফ দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও ছিলেন দারুন অভ্যস্ত।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ডেনমার্কে এসে স্থানীয় বাংলাদেশিদের লোকাল ভিলেজ পলিটিক্সে জড়িয়ে পড়েছিলেন খন্দকার মোশাররফ। রাজধানী কোপেনহেগেন প্রবাসী জনৈক হিন্দু বাংলোদেশিকে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ঢাকায় গেলে বিশেষ এজেন্সি দিয়ে শায়েস্তা করবেন। বিষয়টি যদিও হিন্দু-মুসলিম ইস্যূ নয় তথাপি কাকতালীয় হলেও সত্য, সেই প্রবীর সিকদার বা রানা দাশগুপ্তের মতো ডেনমার্কেও হিন্দু ভদ্রলোকই মন্ত্রীর রোষানলের শিকার হয়েছেন। কোপেনহেগেনে সেদিন অপ্রীতিকর ঐ ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাংলাদেশিরা খন্দকার মোশাররফের দাম্ভিকতা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন।
স্বভাবসুলভ প্রচণ্ড বদমেজাজী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থাকলেও মূলতঃ পারিবারিক কারণেই গত সাড়ে ৬ বছর দায়িত্বে ছিলেন ‘রেমিটেন্সের উৎস’ প্রায় ১ কোটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠিত মন্ত্রণালয়ে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, অভিজ্ঞতার অভাবে এবং একের পর এক আনাড়িপনায় দিনে দিনে শুধু ‘মাথা মোটা’ হয় মন্ত্রীর, কোথাও কল্যাণ হয়নি খেটে খাওয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের। প্রতারক-দালালদের আইনের আওতায় আনার ব্যর্থতা ঢাকতে তিনি চালু করেন আত্মঘাতী পলিসি জি-টু-জি, যার খেসারতে মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যে ধ্বংস হয়ে যায় বাংলাদেশের বৈদেশিক শ্রমবাজার। সর্বশেষ সৌদি আরবে নারী শ্রমিক পাঠানোর নামে ‘যৌনদাসী’ নিবন্ধন তামাসারও আশ্রয় নেন খন্দকার মোশাররফ।
প্রসঙ্গত, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুর অঞ্চলে অগণিত মা-বোনের ইজ্জত হরণের পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার নির্দেশদাতা কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী খন্দকার নুরুল হোসেন ওরফে নুরু মিয়া রাজাকারের ছেলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন তার নিজ পুত্রবধূকে পুঁজি করে দীর্ঘদিন ধরেই ‘ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল’ করে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এমনটাই সম্প্রতি লিখেছিলেন জনকণ্ঠের একসময়ের সুপরিচিত সাংবাদিক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ফজলুল বারী। দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অবশ্য বেশ আগে থেকেই বলছেন, খন্দকার মোশাররফ সামগ্রিক মূল্যায়নে এখন শুধু সরকারি দলের বোঝাই নন, রীতিমতো ‘ভয়ঙ্কর বিষফোঁড়া’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন মন্ত্রিসভায়।