টেক্সাস নগরীর ক্রসবি শহরে আরকেমা ইনকরপোরেটেডের কারখানায় বিস্ফোরণের পর বন্যার মধ্যেই গাড়িতে করে এলাকা ছাড়ছেন বাসিন্দারা। ছবি : এএফপি
হারিকেন হার্ভির আঘাতের পর ভারি বর্ষণে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস নগরীর একটি রাসায়নিক কারখানায় দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নগরীর ক্রসবি শহরে অবস্থিত আরকেমা ইনকরপোরেটেডের কারখানাটিতে এই বিস্ফোরণ হয়।
আরকেমা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে ক্রসবির হ্যারিস কাউন্টিতে অবস্থিত ওই রাসায়নিক কারখানাটিতে পরপর দুটি বিস্ফোরণ হয়। এরপর ওই এলাকা কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। এই ধোঁয়া থেকে ত্বক, চোখ ও ফুসফুসে প্রদাহের সৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট এক খবরে জানিয়েছে, বিস্ফোরণের ফলে ওই কারখানাটিতে আগুন ধরে গেছে।
এদিকে রাসায়নিক কারখানায় ওই বিস্ফোরণের পর পরই কারখানা দুটির তিন বর্গকিলোমিটার এলাকার মধ্য থেকে এলাকা ছাড়তে স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্রসবি নগর কর্তৃপক্ষের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বন্যার কারণে এই বিস্ফোরণে একটি জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যা প্রাণহানিও ঘটাতে পারে।
বিবিসির সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, বিস্ফোরণের পর মানুষ প্রবল বন্যার মধ্যেও ওই এলাকাটি ছাড়তে শুরু করেছে।
এর আগে ঘূর্ণিঝড় হার্ভির পর ভয়াবহ বন্যার কারণে ওই কারখানাটির রাসায়নিক কম্পাউন্ড শীতলীকরণ যন্ত্র অচল হয়ে গিয়েছিল বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। গত বুধবার প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করে বিবৃতি দিয়েছিল।
আরকেমা ইনকরপোরেটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিচার্ড রোউই এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, হারিকেন হার্ভি ও এর পরের ভয়াবহ বন্যায় কারখানাটি পুরোই অচল হয়ে গেছে। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে কারখানাটির রাসায়নিক কম্পাউন্ড শীতলীকরণ যন্ত্র কাজ করছে না। এবং এটিকে চালু করারও কোনো উপায় নেই। ফলে পুরো কারখানায় রাখা রাসায়নিক দ্রব্যগুলো ক্রমেই বিস্ফোরকে পরিণত হচ্ছে। আর এই বিস্ফোরণ বা অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে কারখানাটিকে বাঁচানোর কোনো উপায় নেই।
রিচার্ড রোউই আরো জানিয়েছিলেন, হারিকেন হার্ভি আঘাত হানার আগেই রাসায়নিক কারখানাটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু হার্ভির পর টেক্সাসের ওই এলাকায় ৪০ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে পুরো কারখানাটি ডুবে যায়। হয়ে পড়ে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন।
এতে কারখানাটিতে রাখা উচ্চ তাপমাত্রা সৃষ্টিকারী বিভিন্ন জৈব পদার্থ ও গ্যাসোলিন শীতলীকরণের ব্যবস্থাও নষ্ট হয়ে যায়। বন্যার কারণে কারখানাটিতে রাখা জেনারেটরগুলোও চালু করা সম্ভব হয়নি।