ঢাকা, এপ্রিল ২৩, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৯:২৭:০২

জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া কী, কখন প্রয়োজন

| ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৫ | Saturday, May 19, 2018

 

অস্ত্রোপচারের সময় অজ্ঞান করা হয়। সাধারণত জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ার মাধ্যমে এই কাজটি করা হয়। জেনারেল অ্যানেসথেসিয়ার বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩০৯১তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী।

বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া এন্ড আইসিইউ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া বিষয়টি কী? এটি কখন প্রয়োজন?

উত্তর : আসলে মানুষ মনে করে যে একবার যদি আমার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি, তাহলে আর ফিবরে কি না। এরকম একটি ভীতি অনেক আগে থেকেই আমাদের সমাজে রয়েছে। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া বেশ নিরাপদ। এই নিরাপদ অ্যানেসথেসিয়ার কারণে মানুষের চিকিৎসা অনেক সহজ হয়ে গেছে। সেই জন্য মানুষ যাই মনে করুক না কেন, অ্যানেসথেসিয়া প্রদানকারী যে লোকটি- তিনি একজন শিক্ষিত ব্যক্তি-মানুষের ভালো মন্দ সম্পর্কে তার ভালো জ্ঞান রয়েছে, এরকম একজন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি যখন তাকে অ্যানেসথেসিয়া দেন, তখন তার নিরাপদ প্রত্যাবর্তন বা ফিরে আসা, এগুলো খুবই স্বাভাবিক। সার্জারি একটি পর্যায়ে কিউরেটিভ চিকিৎসা। সুতরাং সেই সার্জারি করা সম্ভব হতো না। অ্যানেসথেসিয়া প্রদানের সময় যিনি অ্যানেসথেসিয়া প্রদান করেন, ওই ব্যক্তি যদি তার জ্ঞান ও প্রয়োজনীয় ডিগ্রি থাকে, তাহলে সাধারণ জনগণের অ্যানেসথেসিয়া নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এ ছাড়া এখন বিভিন্ন মেশিনারিজ অনেক উন্নত হয়েছে। আগের মতো শুধু হাত নির্ভর বা চিকিৎসকের জ্ঞান নির্ভর প্র্যাকটিসও নয়।

প্রশ্ন : জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া বিষয়টি কীভাবে দেয়া হয়, কখন প্রয়োগ করা হয়?

উত্তর : জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া বলতে আমরা বুঝি, রিভার্সেবল স্টেট অব আনকনসাসনেস। অর্থাৎ আমরা একজন মানুষকে পুরোপুরি অজ্ঞান করে ফেলি। কিন্তু সে আবার পুণরায় জ্ঞান ফিরে পায়। এখানে চার পাঁচটা কমপোনেন্ট নিয়ে জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া। প্রথমে একটা সিডিওশন দরকার হয়। এর পর যেই ঘটনাগুলো ঘটে সেগুলো যেন সে মনে না করতে পারে, সেটি করা হয়। একে আমরা এমনেসিয়া বলি। এরপর পুরো সার্জারি পিরিয়ডে যে ব্যথা, এটা যাতে না পায়, তার জন্য যে কাজটি আমরা করি সেটি এনালজেসিয়া। এই কাজটা সম্পাদন করতে গিয়ে তার যে মাংসপেশি সেটি যদি শিথিল থাকে, নরম থাকে, সে কাজটা করার জন্য আমরা মাসেল রিলাক্সেন প্রয়োগ করি। এরপর পুণরায় তাকে জ্ঞান ফিরিয়ে দিই। যখন মাসেল রিলাক্সেন প্রয়োগ করা হয় তখন তার শ্বাস প্রশ্বাসটা বন্ধ হয়ে যায়, তখন আমরা মেশিনের সাহায্যে শ্বাস প্রশ্বাস চালাই। আর সম্পূর্ণ বিষয়টিতে কতটুকু থাকবে না থাকবে এর জন্য আমাদের অনেকগুলো মনিটরিং ডিভাইজ রয়েছে। মনিটরিং ডিভাইজগুলো নন ইনভেসিভ হতে পারে, ইনভেসিভ হতে পারে। এগুলো আমরা তার সঙ্গে লাগিয়ে নিই। অ্যানেসথেসিয়া করার সময় সম্পূর্ণ ভাইটাল সাইন, অরগানগুলো আমরা মনিটরিং করতে পারি।

প্রশ্ন : এ সময় আপনারা কী কী বিষয় দেখেন, আর সেটি হেরফের হয়ে গেলে আপনারা কী করেন?

উত্তর : মনিটরিং সিস্টেমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি হলো ভিজিলেন্ড অ্যানেসথেসিওলজিস্ট সারাক্ষণ যদি থাকেন, এটি হলো সবচেয়ে বড় আদর্শ। আমি যদি সারাক্ষণ একটি রোগীর পাল্স মনিটরিং করি। আমরা অনেক ইনফরমেশন পাই। কিন্তু এ ছাড়াও আমরা মেশিন দিয়ে যেগুলো দেখি, সাধারণত আমরা হার্ট রেট দেখি, তার রেসপারেশন রেট যেটি নিয়ন্ত্রণ করছি সেটা কেমন দিয়েছি, তার অক্সিজেন সেচুরেশনের মাত্রাটা কেমন রয়েছে, তার রক্তচাপ কেমন রয়েছে, এগুলো আমরা তখন দেখি।