নারায়ণগঞ্জে জামাত-শিবিরের হরতালকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে। কর্মসূচির নামে এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা উগ্র ভাবে তান্ডব চালিয়ে থাকে এমন গুঞ্জন রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। আর এ কারনে জামাতের কোন কর্মসূচি আসলেই নানা ধরনের আতঙ্কে ভোগের শহরবাসী। এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা অন্যান্য সময়ে একটি ব্যানার নিয়ে রাজপথে ঝটিকা মিছিল করলেও এখন নিজেদের রক্ষায় দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে রাজপথে নেমে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে তাদের অবস্থান জানান দিতে শুরু করেছে। নারায়ণগঞ্জে জামাত-শিবিরের ধারাবাহিক তৎপরতায় এখন সাধারন মানুষের মধ্যে জামাত-শিবির আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি জামাত-শিবিরের তৎপরতারোধ প্রশাসনের ব্যর্থতাকে বড় করে দেখতে শুরু করেছে সাধারন মানুষ। তাদের মতে, গোয়েন্দা সংস্থার চোখের অন্তরালে জামাত-শিবির তাদের তৎপরতা দীর্ঘ দিন ধরে চালিয়ে আসলেও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তার কোন আগাম বার্তা দিতে পারছে না পুলিশ কিংবা র্যাব সদস্যদের কাছে। এ নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এছাড়া জামাত-শিবিরের কোন কর্মসূচির আগাম বার্তা জানলে সাধারন মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। সে সব কর্মসূচির মধ্যে হরতাল অন্যতম।
তথ্যমতে, জামাত-শিবির নিজেদের শক্তিশালী করতে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। কখনো সরকার বিরোধী কর্মসূচি নিয়ে, আবার কখনো নিজ দলের আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে রাজপথে নেমে আসেন। আর এসব কর্মসূচির ঘিরে জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে রাজপথে নেমে তান্ডব চালিয়ে বীর দর্পে রাজপথ ত্যাগ করে চলে যায়। গত ক’বছর ধরে জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা শহরের একাধিকবার মিছিল বেড় করে আইন শৃঙ্কলা বাহিনীর সাথে সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে বেশ ক’জন সদস্যকে গুরুতর জখম করে পূনরায় নিরাপদে চলে যায়। জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা এভাবে একের পর এক ঝটিকা মিছিলে নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে নিরাপদে চলে যেতে সক্ষম হলেও জেলার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এসবের কোন আগাম তথ্য দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ থেকেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে জামাত-শিবির প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিয়ে সুকৌশলে নিজেদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
অপর একটি সূত্র জানায়, জামাত-শিবিরের অর্থের যোগানদাতা হিসেবে বেশ কিছু ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে যেমন অর্থের যোগান দিয়ে থাকে তেমনি নিরাপদে থাকার জন্যও ব্যবস্থা করে থাকে। জামাত-শিবির নিয়ন্ত্রিত এসব প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনাকারীদের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এসব প্রতিষ্টঅন থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে জামাত-শিবিরের নেতাকর্মীরা নানা ধরনের নাশকাত চালাচ্ছে বলে মনে করছেন জেলাবাসী। জামাত-শিবিরকে শেল্টার দিতে গোপনে শহর ও শহরের বাইরে বেশ কিছু আর্থিত ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বিশেষ করে শহর ও ফতুল্ল¬ায় এসব প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশী। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইসলামী ব্যাংক, ফতুল¬ায় ফতুল¬া জেনারেল হাসপাতাল, সেবা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার, সেবা হাসপাতালসহ বেশ কিছু ওষুধ ফার্মেসীর মালিকও রয়েছে। জামাত-শিবির নিয়ন্ত্রিত এসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন বলেও মনে করছেন অনেকে।
উল্লে¬খ্য, গত বছর ও চলতি বছরে শহরের মন্ডলপাড়া, নাসিক ভবন, চাষাঢ়া মোড়সহ বেশ ক’টি স্থান থেকে শবিরের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল বেড় করে শহরের একাধিকবার তান্ডব চালিয়েছে। যা দেশব্যাপী আলোচিত হয়েছে। তাদের এসব কর্মসূচি প্রায় সময়ই ১৫মিনিটের বেশী সময় হয় না। তাদের এসব মিছিল থেকে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের শ্লে¬াগান দেয়াসহ কারাগারে আটক দলের শীর্ষ নেতাদের মুক্তি দাবী করা হয়। এ সময় তারা লাঠিসোটা ও রড এবং ইটপাটকেল নিয়ে মিছিলে অংশ্রগ্রহন করেন। আর এসব কারণে জামাত-শিবিরের কর্মসূচিতে শহর ও শহরের বাইরের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে থাকে