ঢাকা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৪:৩০:২৫

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

জাতীয় কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা

| ১২ ভাদ্র ১৪২২ | Thursday, August 27, 2015

nazrul-somadhe

নিউজডেস্ক :: ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করছে নজরুলপ্রেমীরা।

ফুলেল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে বৃহস্পতিবার ভোর হতেই নজরুলপ্রেমীরাআসতে থাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে।

চারদিকে সারি সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান নজরুল ভক্তরা। ভোরের আলো ফোঁটার সঙ্গে সঙ্গে কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শুরু করেন কবি পরিবারের সদস্য, বিশিষ্টজন, ভক্ত-অনুরাগী ও রাজনৈতিক নেতারা।

কবির আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে সকালে ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে কোরানখানির আয়োজন করা হয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন চির যৌবনের ও বিদ্রোহের কবি। অন্যায় ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে বিভিন্ন সংঘাতে-সংগ্রামে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রেরণা ছিলেন তিনি।

সকাল সোয়া ৭টায় অপরাজেয় বাংলায় ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জমায়েতের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা কবির সমাধিস্থলে পৌঁছে। পরে কবির মাজার প্রাঙ্গণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কবির মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে ঢাবি উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দীন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ ড. কামাল উদ্দীনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

সকালে কবি পরিবারের পক্ষ থেকে নজরুলের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কবির নাতনী মিষ্টি কাজী। তিনি বলেন, ‘বর্তমান দেশের যে পরিস্থিতি এ সময়ে আমার দাদাকে খুবই প্রয়োজন ছিল।

এ ছাড়া বিদেশ থেকে যে সকল অতিথি আসে তারা যেন আমার দাদার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারে। তিনি যে এত জনপ্রিয় একজন কবি সেটি যেন তারা বুঝতে পারে।’ এ ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান তিনি ।

সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘নজরুলের লেখা কোটি মানুষের হৃদয়ে নাড়া দেয়, চেতনা জাগায়। জাতির জনক, জাতীয় কবি এদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গেজেট প্রকাশ করতে হয় না। কোটি কোটি মানুষ স্বত:স্ফুর্তভাবে হৃদয় থেকে তাদের শ্রদ্ধা জানায়।’

আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ। বিএনপির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন।

এসময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নজরুলের কবিতার যে আবেদন তা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি এ সময়ে তার গানের মাহাত্ম্য জাতিকে প্রতিভাত করে তোলে। জাতিকে অন্যায়ের প্রতিবাদে প্রেরণা জোগায়।

ঢাবির বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরাও কবির সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী, নজরুল একাডেমী, চারণ সাংস্কৃতিক একাডেমী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী পরিষদ. নজরুল ইন্সটিটিউট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ নজরুল আবৃত্তি পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সর্বস্তরের মানুষের ফুলে ফুলে ভরে ওঠে কবির সমাধি।

১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। মাত্র ২২ বছরের সাহিত্যজীবনে অসংখ্য কবিতা, গান, উপন্যাস, প্রবন্ধ ও নাটক রচনার পাশাপাশি বেশ কিছু পত্রিকা সম্পাদনা করেন তিনি। এই বৈচিত্রপিয়াসী কবি চলচ্চিত্রে অভিনয় এবং সঙ্গীত পরিচালনাও করেন।

১৯২২ সালে নজরুলের বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’ প্রকাশিত হওয়ার পর ব্রিটিশ রাজের ভিত কেঁপে ওঠে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নজরুল সাহিত্যকে নিয়ে গেছেন সাধারণ মানুষের কাছে।

বাংলা সাহিত্যে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৪ সালের ৯ ডিসেম্বর বিশেষ সমাবর্তনের মাধ্যমে তাকে সম্মানসূচক ‘ডি লিট’ প্রদান করে।

১৯৭৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত করা হয় নজরুলকে। সে বছরই ২৯ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কবি। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কবিকে সমাহিত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের উত্তর পাশে।