সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ফেনীর একটি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন হাফেজ আবদুল কাদের।
সোনাগাজী সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ হাফেজ কাদের গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত তিনঘণ্টা ১৬৪ ধারায় ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিনের কাছে নিজের জবানবন্দি দেন।
এ নিয়ে এই মামলায় মোট চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন। এই মামলার এজাহারে থাকা আট আসামির সবাই গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তার মোট ১৮ জনের মধ্যে ১৩ জনকে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত বুধবার ঢাকার হোসেনী দালান এলাকা থেকে হাফেজ আবদুল কাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে ঢাকা থেকে ফেনীর আদালতে হাজির করা হয়।
আবদুল কাদের সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মনছুর খান পাঠানবাড়ীর আবুল কাসেমের ছেলে। তিনি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার অনুগত হিসেবে মাদ্রাসার হোস্টেলে থাকতেন আবদুল কাদের। আবদুল কাদের গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার পরদিন মালামাল নিয়ে হোস্টেল ছেড়ে বাড়ি চলে যান। কাদেরকে নিয়ে এই মামলায় মোট চারজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন।
নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার এ মামলায় এখন পর্যন্ত তিন নারীসহ মোট ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও পিবিআই।
গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় মুখোশ পরা চার/পাঁচজন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ১০ এপ্রিল বুধবার রাত ৯টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি।