নিউজ ডেস্ক :: শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়াকে অন্যায় হিসাবে দেখছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
ছাত্রলীগের পক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, “ওরা কি দোষ করেছে? ওরা তো কম বয়সী। তাদেরকে যা বোঝাবেন তাই করবে। এই ছাত্রলীগের ছেলেদের শাস্তি দেওয়াটা এক ধরনের অন্যায়। যে তাদের পাঠিয়েছে, তাদেরকে শাস্তি দেন।”
বুধবার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি নেওয়া শাস্তির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সাংবাদিকদের কাছে জাফর ইকবাল এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি শাবিপ্রবির শিক্ষকদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগের সাত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে তিন নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি দিয়েছে ছাত্রলীগ। এছাড়া বাকি চার ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জাফর ইকবাল প্রশ্ন তুলে বলেন, “শিক্ষকদের ওপর কে হামলা করেছে? ছাত্রলীগের ছেলেরা? না। এরা তো ছাত্র, আমাদের ছাত্র। এত কমবয়সী ছেলে, এরা কী বোঝে? ওদেরকে আপনি যা বোঝাবেন, তা-ই বুঝবে। কাজেই আমি যখন দেখলাম যে তিনজন আর চারজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এখন আমার লিটারালি (আক্ষরিক অর্থে) ওদের জন্য মায়া লাগছে।”
ছাত্রদের যারা বিপথগামী করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, “এই বাচ্চা ছেলেগুলোকে মিসগাইডেড করে পাঠিয়ে দিয়েছে, এখন তারাই বিপদে পড়েছে। ছাত্রত্ব বাতিল হবে, শাস্তি হবে। ওরা কি দোষ করেছে? এখন আমার খুবই খারাপ লাগছে। এই ছাত্রলীগের ছেলেদের শাস্তি দেওয়াটা এক ধরনের অন্যায়। যে তাদের পাঠিয়েছে, তাদেরকে শাস্তি দেন।”
‘ছাত্রলীগ থেকে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে’, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, “এরা আমাদের ছাত্র। এদের আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। আমরা ওদের মাথায় হাত বুলিয়ে, ওদের সঙ্গে কথা বলে, ওদেরকে ঠিক জায়গায় নিয়ে আসতে পারব। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগাছাকে দূর করে দিতে। আমি বলি, না। আগাছাকে আমরা ফুলগাছে পরিণত করব। সম্ভব। আমাদের ছাত্র, আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। আমরা ওদেরকে ঠিক করে দেব।”
এদিকে শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি, মৌন মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা এ কর্মসূচি পালন করলেও উপাচার্যের পক্ষে থাকা সরকার সমর্থক শিক্ষকদের আরেকটি অংশ ও বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
সমাবেশ থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত উপাচার্য ভবনের সামনে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।