ঢাকা : আতকিংত না হয়ে সচেতনভাবে চিকুনগুনিয়া মোকাবেলা করতে হবে-মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশান ক্যাডেট কলেজ ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে দেশের চিকিৎসা বিশেজ্ঞরা এই কথা বলেন।
রোটারী ক্লাব ও ক্যাডেট কলেজ ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে চিকুনগুনিয়া ও তার প্রতিকার শীর্ষক সেমিনারে প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে রোটারী ক্লাব গভর্ণর এফ, এইচ আরিফ, জেলা ৩২৮১ ও ক্যাডেট কলেজ ক্লাবের সভাপতি ও বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান রাশেদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, রোটারী ক্লাব ঢাকা নগরী, সভাপতি ফারহানা ফেরদৌস। আলোচনায় অংশ নেন ডা. মাসুদ হোসেন, জেসমিন আখতার ও (অবঃ) মেজর তাসলিমা ফেরদৌস ও ডা. এএসএম বদরুদ্দোজা।
বক্তারা জানান, চিকুন গুনিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের প্রচন্ড জ্বর হবে, ১শ ৪ থেকে ৫ ডিগ্রী বা তারও বেশী তাপমাত্রা হতে পারে। অসহনীয় মাথা ব্যথা ও বমি বমি ভাব হতে পারে। হাড়ে বিশেষত গিটে গিটে অসহনীয় ব্যথা হয়। তবে জ্বর ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে কমলেও শরীর ও গিরায় ব্যথা এক থেকে দেড় মাস পর্যন্ত থাকতে পারে।
বক্তারা জানান, এই রোগে মস্তিস্কে ইনফেকশন হলেও তা বিরল। এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে, লাখে ১৭ জন মস্তিস্ক সংক্রমণের স্বীকার হচ্ছেন।
চিকুনগুনিয়া রোগে এখনো কোনো ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হয়নি। জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল খেতে হবে। প্রচুর পানি শরবত, ওরস্যালাইন, ডাবের পানি খেতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
মশাবাহিত রোগ হওয়ায় খুব সহজেই চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ করা যায়। এডিস মশা দিনে কামড়ায়, তাই দিনের বেলায় সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় ঘুমালে মশারি ব্যবহার করতে হবে। মশার বংশ বিস্তার রোধ করতে বাসার আশেপাশে পানি জমিয়ে রাখা যাবে না।
কোনো ব্যক্তি একবার চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে পববর্তিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। চিকুনগুনিয়ায় কেউ কেউ মারা গেলেও যেহেতু এ রোগের চিকিৎসা আছে তাই মরণঘাতী নয়। সুতরাং আতকিংত না হয়ে সচেতনভাবে এ রোগ মোকাবেলা করতে হবে।
বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ৬০ টি দেশে বিভিন্ন সময়ে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস জ্বরের প্রদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ২০০৮-ও ২০০৯ সালেও বাংলাদেশে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস জ¦র হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় ১৯৫২-৫৩ সালে এডিস মশার কারণে এই ভাইরাস বিস্তার লাভ করেছিল। সচেতনতাই এ রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায়।