মায়ের মানসিক অসুস্থতা নিয়ে রসিকতা করায় ১৪ বছরের ছেলেকে খুন করে পুড়িয়ে দেহ লোপাট করলেন মা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের কেরালা রাজ্যের কোল্লামের চাথান্নুর এলাকায়। গত বুধবার বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে ওই কিশোরের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে কেরালা পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, মায়ের নাম জয়ামল। ছেলের নাম জিট্টু। সে ক্লাস নাইনের ছাত্র। জয়ামল ও তার স্বামী জবের একটি মাত্র ছেলে জিট্টু। জানা যায়, মাঝেমধ্যেই জিট্টু মায়ের মানসিক সুস্থতা নিয়ে রসিকতা করত। এমনকি মাকে পাগল বলেও রসিকতা করত সে। এই নিয়ে ১৬ জানুয়ারি ঝগড়া হয় মা ও ছেলের সঙ্গে।
পুলিশকে জয়ামল জানান, সেদিন প্রচণ্ড রেগে গিয়ে নিজের ওড়না দিয়ে ছেলের গলায় ফাঁস দেন তিনি। শ্বাসরোধ করে ছেলেকে খুন করেন। মৃত ছেলের দেহ বাড়ির পেছনে নিয়ে গিয়ে শুকনো পাতা ও নারকেলের খোলা দিয়ে প্রথমে ছেলের দেহ পোড়ান। যাতে কেউ বুঝতে না পারেন, সে জন্য পোড়া পাতা বাড়ির দেয়ালের বাইরে বের করে দেন। এরপর লোকজন ফাঁকা হলে ছেলের পোড়া দেহ দেয়ালের বাইরে বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে নিয়ে গিয়ে ফেলে দিয়ে আসেন।
ওই দিন ঘটনার রাতে স্থানীয় ওষুধের দোকানে ফার্মাসিস্টের কাজ করা স্বামী জব বাড়িতে ছিলেন না। তিনি বাড়ি ফিরে দেখেন, বাড়িতে ছেলে নেই। জিজ্ঞেস করলে স্ত্রী জয়ামল বলেন, সে অনেকক্ষণ আগে স্কেল কিনতে বাজারে বেরিয়েছে। এখনো ফেরেনি। শুনে বাবা জব স্থানীয় প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের নিয়ে জিট্টুর সন্ধানে বের হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার খোঁজ মেলেনি। পরদিন স্ত্রীর সঙ্গে করে স্থানীয় থানায় গিয়ে ছেলের নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরি করেন তিনি।
এর পরেই ঘটনার তদন্তে নামে স্থানীয় চাথান্নুর থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার জিট্টুর মা জয়ামলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছেলের দেহ উদ্ধারের পর পুলিশের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন জয়ামল।
জয়ামলের স্বামী জব জানিয়েছেন, ওই দিন ছেলে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করছিল। তার পরে কাজে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান যিনি। এর মধ্যে এত কাণ্ড ঘটে গেছে, তিনি টেরও পাননি। পুলিশকে অবশ্য স্বামী অবশ্য জানিয়েছেন, মানসিকভাবে সুস্থ নয় তাঁর স্ত্রী। তবে এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত নেই বলে পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছেন জয়ামল।