ঢাকা, এপ্রিল ১৮, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৫:৪০:৫৭

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

কালবৈশাখীর তান্ডব ॥ প্রথম ছোবলেই প্রাণ গেল ১০ জনের

| ১৮ চৈত্র ১৪২৫ | Monday, April 1, 2019

কালবৈশাখীর তান্ডব ॥ প্রথম ছোবলেই প্রাণ গেল ১০ জনের
স্টাফ রিপোর্টার ॥ রবিবার ছিল বাংলা চৈত্র মাসের ১৭তম দিন। বৈশাখ আসতে এখনও ১২ দিন বাকি। অথচ বৈশাখ আসার আগেই রবিবার সারাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেল এই মৌসুমের প্রথম কালবৈশাখী। কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ পড়ে, ঝড়ের সময় ভবন থেকে ইট পড়ে এবং বজ্রপাতে, দেয়াল ধসে এবং নৌকাডুবিতে এদিন রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই সারাদেশের ওপর দিয়ে গুমোট ও বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করছিল। এদিন সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে বয়ে যায় কালবৈশাখাশী ঝড়। সারাদেশের পাশাপাশি রাজধানীতে বয়ে যায় এই কালবৈশাখী । এ সময় মুষলধারে ঝড়-বৃষ্টিপাত শুরু হয়। সন্ধ্যা থেকে ঝড়ো হাওয়া, বিজলী চমকানোসহ শিলাবৃষ্টিও হয়েছে।রাজধানীর ঢাকায় কালবৈশাখীর ঝড়ে গাছ ভেঙ্গে ১ জন এবং ভবন থেকে ইট পড়ে ২ জনের, দেয়াল চাপা পড়ে ১ জন এবং বুড়িগঙ্গায় নৌকা ডুবে ২ জনের মৃত্যু খবর পাওয়া গেছে। বিদ্যুত গ্রিড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে এসব এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় সাড়ে- তিন ঘণ্টা বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় কাটাতে হয়েছে। গাছ উপড়ে এবং ডাল ভেঙ্গে প্রাইভেট কার ও সিএনজি চাপা পড়ে। এ সময় যানচলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।

ঝড়ের প্রচ- বাতাসে রাজধানীসহ দেশের অনেক স্থানে বহুতল ভবন কেঁপে কেঁপে ওঠে। রাজধানীর হাতিরঝিল, কামরাঙ্গীরচরের সোনামুড়া ঘাট, সোনারগাঁও এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে মৌলভীবাজারের দুই সহোদর শিশু, নেত্রকোনায় একজন কৃষক এবং কিশোরগঞ্জের ইটনায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যার সময় ঢাকার আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে নামে ঝড়, যা কয়েক মিনিট স্থায়ী ছিল। এতে বিভিন্ন স্থানে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। এছাড়াও এদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানের ওপর দিয়ে বয়ে যায় কালবৈশাখী ঝড়।

ঝড়ের সময় রাজধানীর পল্টনে একটি ভবন থেকে কয়েকটি ইট পড়ে হানিফ মিয়া (৩৫) নামে এক চা দোকানদারের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের বাবা আব্দুল লতিফ সরকার। গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায়। তিনি রাজধানীর মুগদা এলাকায় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতেন। নিহতের খালাত ভাই রুবেল জানান, দীর্ঘদিন ধরে হানিফ পল্টন মল্লিক কমপ্লেক্সের নিচে ফুটপাথে চায়ের দোকানদারি করতেন। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঝড়ের সময় হঠাৎ পার্শ্ববর্তী ভবনের ওপর থেকে কয়েকটি ইট নিচে থাকা হানিফের ওপরে পড়ে। এতে হানিফ গুরুতর আহত হয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৭টার দিকে হানিফের মৃত্যু হয়। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, মধ্য চৈত্রে কালবৈশাখীর আঘাতে রাজধানীর বেশ কিছু জায়গা থেকে আহত হয়ে অনেকে হাসপাতালে এসেছেন। তাদের মধ্যে হানিফের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের অবস্থা গুরুতর নয়।

সংসদ ভবন এলাকায় গাছ ভেঙ্গে পড়ে এক নারী মারা যান। শেরে বাংলা নগর থানা সূত্রে জানা যায় ওই নারীর নাম মিলি ডি কস্তা (৬০)। তিনি পাশের মনিপুরি পাড়ায় থাকতেন। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন।

এদিকে মিরপুর থানার ওসি দাদন ফকির বলেন, ঝড়ের সময় পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় ইট পড়ে দুলাল মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। দুলাল বেসরকারী একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক। পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় একটি টিনশেড ঘরে থাকতেন তিনি। সেখানে নির্মাণাধীন বাড়ির দেয়াল থেকে ইট পড়ে তিনি আহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে ওসি জানান।

এদিকে কদমতলী থানা এলাকার পলাশপুরে দেয়ালচাপা পড়ে নিহত হন হাসান (৪০) নামে এক রিক্সাচালক। কদমতলী থানার ওসি জামালউদ্দীন মীর বলেন, পলাশপুর ৫ নম্বর সড়কে একটি বাড়ির সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় দেয়াল পড়ে মারা যান হাসান। ঝড়ের মধ্যে বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌকা ডুবে এক নারী ও তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। নিহত মা ও পাঁচ বছর বয়সী ছেলের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, কেরানীগঞ্জের মাদারীপুর ঘাট দিয়ে কামরাঙ্গীরচরে যাওয়ার সময় ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাটি।

এদিকে কালবৈশাখীর ছোবলের কাবলে পড়ে গাছ উপড়ে এবং ডাল ভেঙ্গে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ফলে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ওইসব এলাকার বাসিন্দাদের বিদ্যুতবিহীন অবস্থায় কাটাতে হয়। মিন্টুরোডের পুলিশ ভবনের সামনে গাছ পড়ে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে যায়। এছাড়া গাছ পড়ে যানচলাচল ব্যহত হয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানানো হয় রাজধানীতে ঝড়ে বঙ্গভবন এলাকা, বেইলি রোড, মহাখালীতে গাছ পড়ে বিদ্যুত সংযোগে সমস্যা তৈরি হয়। এ ছাড়াও পুরান ঢাকা, মিরপুর, উত্তরাসহ আরও কয়েকটি এলাকায়ও বিদ্যুত বিভ্রাট দেখা দেয়।

এদিকে ঝড়ের কারণে রাজধনীর বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে এবং ডাল ভেঙ্গে যানচলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। অনেক প্রাইভেটকার সিএনজিসহ বিভিন্ন যানবাহনের ক্ষতি হয়। ধানমন্ডি তিন নম্বর সড়কেও গাছের ডাল ভেঙ্গে সড়কে পড়ে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। ঝড়ে শাহবাগ থানার সাইনবোর্ড উড়ে গেছে। মিন্টোরোডে পুলিশের ভবনের সামনে বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ঝড়ে রাজধানীর অন্তত ২৫টি স্থানে গাছ পড়ার ঘটনা ঘটেছে।

এদিকে, রাজধানীর হেয়াররোড এলাকায় গাছ পড়ে সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, প্রাইভেটকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও মহানগরীর মিরপুর রোড, সাইন্সল্যাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, ধানমন্ডি এলাকায় গাছ উপড়ে এবং ডাল ভেঙ্গে রাস্তার উপরে পড়ে। রমনা থানার ডিউটি অফিসার শহীদুল উসমান মাসুম বলেন, ‘হেয়ার রোডে ঝড়ের সময় গাছ পড়ে দুটি সিএনজি ও দুটি প্রাইভেটকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চালক ও গাড়ির ভেতরে থাকা ব্যক্তিরা সামান্য আহত হলেও কারও অবস্থা গুরুতর নয়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সন্ধ্যা ছয়টার পর রাজধানীতে ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান জানান, রবিবার সন্ধ্যায় রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় ৭৪ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। ঝড়ের স্থায়িত্ব ছিল ২০ মিনিটের মতো। তবে কালবৈশাখীর স্থায়িত্ব ছিল ১ মিনিট। ঢাকায় ঝড় কমে গেলে এই ঝড় ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পূর্বদিকে এগিয়ে যায়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাজশাহী থেকে শুরু হওয়া একটি বজ্রমেঘ দেশের মধ্য, পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এতে দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকায় ওই কালবৈশাখী আঘাত হানে। এর সঙ্গে বজ্রপাত ও বৃষ্টিও হয়। সারাদেশের মধ্যে ঝড়বৃষ্টির দাপট রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি ছিল। আজ সোমবার ও আগামী মঙ্গলবারও এই ঝড়বৃষ্টি থাকতে পারে।

এবার শীত শেষে শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরু হয় বৃষ্টিপাত। বৃষ্টির কারণে মধ্য মার্চ পর্যন্ত হালকা শীতের আমেজ ছিল। মধ্য মার্চের পর থেকে সারাদেশে হঠাৎ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সেই সঙ্গে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করে। আবহাওয়া অফিস বলছে, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে বিগত কয়েকদিন ধরেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রমেঘের আনাগোনা বাড়ছিল। বজ্রমেঘের কারণে মার্চের প্রথম দিকেই দেশের সমুদ্রবন্দরসমূহকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেতও প্রদান করা হয়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে গত কয়েকদিন ধরেই প্রকৃতিতে ছিল ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি। রবিবার সকাল থেকে রাজধানীর আকাশ মেঘলা হতে শুরু করে। এরপর প্রচন্ড রোদ দুপুরে ভ্যাপসা গরম। বিকেল হতেই পশ্চিম আকাশে কালবৈশাখী মেঘ ঘনিয়ে আসে। এরপরেই শুরু হয় ধূলিঝড়ের। সন্ধ্যায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও শিলা বৃষ্টি শুরু হয়। কালবৈশাখী জড়ের কারণে মগবাজারে একটি বেসরকারী হাসপাতালের দেয়াল ধসের ঘটনা ঘটেছে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়া ঝড় চলে প্রায় ২০ মিনিট ধরে। এরপর হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে আরও কিছুক্ষণ।

সন্ধ্যার হঠাৎ এই কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে অনেক পথচারী এবং অফিস ফেরত যাত্রী বিপাকের মধ্যে পড়ে যায়। বৃষ্টির মধ্যে অনেককে ভিজে একাকার হতেও দেখা গেছে। ঝড়ো বাতাসের কারণে যে যার মতো নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নেন। বৃষ্টিতে নিচু এলাকায় পানি জমতে দেখা গেছে। সড়কে স্থবির হয়ে পড়ে যানবাহন। তবে হঠাৎ এই কালবৈশাখীর সঙ্গে বৃষ্টিপাতের কারণে স্বস্তিও মিলেছে। ভ্যাপসা গরমের কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই নগরজীবনে অস্থিরতা চলছিল। তার সমাপ্তি হয় রবিবার সন্ধ্যার বৃষ্টিপাতের কারণে।

আবহাওয়াবিদরা জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে মৌসুমি লঘুচাপের প্রভাবে এই কালবৈশাখী ঝড় হচ্ছে। এই মৌসুমে ঝড় বৃষ্টি স্বাভাবিক। পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকায় বাংলাদেশের পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা এবং সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ- হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্য এলাকায় পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে মৌলভী বাজার থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, কমলগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দমকা বাতাসের সঙ্গে সৃষ্ট বজ্রপাতে দুই সহোদর শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উত্তর পতনউষার গ্রামের দিনমজুর জুনেদ মিয়ার ৬ বছরের শিশু কন্যা সাদিয়া আক্তার ও ৪ বছরের মুন্নী আক্তার বাড়ির উঠানে খেলা করছিল। এ সময় আকস্মিক বজ্রপাত হলে সদিয়া আক্তার ও ছোট বোন মুন্নী আক্তার গুরুতর আহত হয়। আহতাবস্থায় তাদের মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। নিহত দুই বোন পতনউষার মহিলা মাদ্রাসার শিশু শ্রেণীর ছাত্রী।

নিজস্ব সংবাদদাতা কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, ইটনা উপজেলার হাওড়ে ঘাস কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে রাব্বী মিয়া (২৫) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ইটনা সদরের পশ্চিমগ্রাম নন্দীহাটি গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে। রবিবার দুপুরে উপজেলা সদরের বলদারঘাটে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, সকালে পাশের বলদার হাওড়ে ঘাস কাটতে যায় রাব্বী। পরে সেখানে দুপুরের দিকে দমকা বাতাসের সঙ্গে আকস্মিক বজ্রপাতের ঘটনা হলে ঘটনাস্থলেই রাব্বীর মৃত্যু হয়।

নেত্রকোনা থেকে নিজস্ব সংবাদাতা জানান, উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে বজ্রপাতে এক কৃষক মারা গেছেন। নিহত কৃষকের নাম আছর উদ্দিন (৬৮)। রবিবার বিকেলে কৃষকের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল চারটার দিকে আছর উদ্দিন বাড়ির সামনে মগড়া নদীর কাছে ক্ষেতে কৃষিকাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির সঙ্গে আকস্মিক বজ্রপাতে তার শরীর ঝলসে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।