ঢাকা, এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ১৮:৪৪:৩৩

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের সাংস্কৃতিক সম্পৃক্ততার আহ্বান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর সংসদে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে স্বতন্ত্র সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রকল্প বাস্তবায়নে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে পিপিপি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগমন স্বচ্ছ নির্বাচনে সহায়ক : তথ্যমন্ত্রী

একনেকে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন

| ২২ অগ্রহায়ন ১৪২৩ | Tuesday, December 6, 2016

ঢাকা : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।
আজ রাজধানীর শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
একনেক বৈঠক শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ক্ষমতায় থাকার সময় ছোট পরিসরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, তখন এটি ছিল ২০০ মেগাওয়াটের। সেসময় বঙ্গবন্ধুর জামাতা বিশিষ্ট পরমানু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়াকে প্রকল্প পরিচালক করা হয়।’
তিনি বলেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর প্রকল্পটি থমকে যায়। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবার উদ্যোগ নেয়া হলেও আর্থিক সংকটসহ নানা কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। এখন রাশিয়ার সহযোগিতায় এটি করা হচ্ছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জ্বালানী তেলের পরিবর্তে এখন পরিবেশবান্ধব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দিকে যেতে হচ্ছে। বাংলাদেশে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুৎ স্বল্পতা যেমন দূর হবে, তেমনি বিদ্যুৎতের উৎপাদন খরচও অনেক কমে আসবে।
তিনি জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৬০ বছর নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এর পেছনে বার্ষিক খরচ হবে মাত্র এক হাজার কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে জাতি হিসেবে আমরা বিশ্ব পরিমন্ডলে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবো বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড ব্যয়ের এই প্রকল্পে দু’টি ইউনিটের মাধ্যমে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল পর্বের কাজ বাস্তবায়নে প্রকল্প সহায়তা হিসেবে রাশিয়া ৪ শতাংশ সুদহারে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা বা ১১ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে। ১০ বছরের রেয়াতকালসহ ২০ বছর মেয়াদে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেয়া হবে বাকি ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে করবে। প্রকল্পটি ২০১৬ থেকে শুরু হয়ে আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে গত ২৬ জুলাইয়ে রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের মধ্যে একটি ‘স্টেট এক্সপোর্ট ক্রেডিট’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কমিশনিং, পরিচালন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে দুই হাজার ৫৩৫ জন কাজ করবে। এছাড়াও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ইউনিটে বিভিন্ন পর্যায়ে ৩৬৯ জন লোক নিয়োজিত থাকবে।
আজকের একনেক সভায় রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ এক লাখ ৫২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা মোট ১২টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৩৫ হাজার ৬৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে এক হাজার ৬৩৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে এক লাখ ১৬ হাজার ১৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা পাওয়া যাবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (ফেজ-১) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ১০৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামো ও গবেষণা সক্ষমতা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৭৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। জাতীয় ডাইজেস্টিভ ডিজিজেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২১৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৫০১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। চট্রগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৯৬২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
এছাড়া বাংলাদেশ (ভেড়ামারা) ভারত (বহরমপুর) বিদ্যমান গ্রীড আন্তঃসংযোগের ক্ষমতা বর্ধিতকরণ (৫০০ মেগাওয়াট) প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৭৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আনোয়ারা-ফৌজদারহাট গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৭৬ কোটি ১১ লাখ টাকা। যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। সমগ্র দেশে শহরও ইউনিয়ন ভূমি অফিস নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। মধ্য-পশ্চিমমাঞ্চলীয় জলাভুমি ব্যবস্থাপনা ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা ৭৮০ কোটি টাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৬১৯ কোটি ৪৬ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাসমূহের উন্নয়ন এবং নালা প্রতিরোধ দেয়াল, ব্রীজ ও কালভার্ট এর নির্মাণ পুনঃনির্মাণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা।