ঢাকা, মার্চ ২৯, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, স্থানীয় সময়: ১৬:৩০:৪৯

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে সরকারের পাশাপাশি জনগণেরও নজরদারি চাই : সংসদে প্রধানমন্ত্রী রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে : প্রধানমন্ত্রী দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও উপনেতা আনিসুল ইসলাম রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসার নিশ্চয়তা না পেয়ে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে : প্রধানমন্ত্রী

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে গোপালগঞ্জে অবরুদ্ধ সেই আট পরিবার পেল যাতায়াতের পথ

| ১৯ আশ্বিন ১৪২৫ | Thursday, October 4, 2018

 

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় অবরুদ্ধ সেই আট পরিবার অবশেষে যাতায়াতের পথ পেয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মহফুজুর রহমান বুধবার সকালে প্রভাবশালীর প্রাচীরের কিছু অংশ ভেঙ্গে এ পথ বের করে দেন।

এ দিন সকালে উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের নয়াকান্দি গ্রামের তরুর বাজারে ঘটনাস্থলে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি দাঁড়িয়ে থেকে সার্বিক কাজে তদারকি করেন।

গত ২১ সেপ্টেম্বর দৈনিক সমকালের শেষের পাতায় এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়।

এরপর ২৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা আইন শৃংখলা মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এর পরদিন কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি তার কার্যালয়ে দু’ পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে বলেন। দু’ পক্ষই ওই কার্যালয়ে জমির কাগজপত্র জমা দেয়। পাশাপাশি চলাচলের রাস্তা পেতে আট পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হয়।

অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত একটি পরিবারের প্রধান ইজাবুল শেখ বলেন, দৈনিক সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের খোঁজ খবর নিতে আসেন ও চলাচলের পথ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বুধবার সকালে প্রাচীরে কিছু অংশ ভেঙ্গে তিনি আমাদের চলাচলের পথ করে দিয়েছেন। চলাচলের পথ পেয়ে আমাদের মধ্যে স্বোস্তি ফিরে এসেছে। আমরা আট পরিবার দুই বছরের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছি।

আরেকটি পরিবারের প্রধান শুখরঞ্জন জয়ধর বলেন, পাশ্ববর্তী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার করফা গ্রামের নুর ইসলাম শেখ ঢাকায় এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসা করেন। তার ভাই রফিকুল ইসলাম টুঙ্গিপাড়ার ডুমুরিয়া ইউপির এক নম্বর ওয়ার্ড সদস্য। তারা খুবই প্রভাবশালী। গত ৩ বছর আগে নুর ইসলাম নয়াকান্দি গ্রামের তরুর বাজারের বীরেণ বিশ্বাসের কাছ থেকে কিছু জমি ক্রয় করেন। তারপর তরুর বাজারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন কর্নার থেকে কয়েকটি দোকানের কয়েক শতাংশ জায়গা কেনেন। এরপর পর্যায়ক্রমে তিনি নয়াকান্দি তরুর বজারের ৫৩ টি পরিবারের দোকানপাট ও বসত বাড়ির কিছু কিছু জায়গা জোর করে দখলে নেন। এক পর্যায়ে তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি ৮০ ফিট জমি দখল করেন। গ্রামের মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করে উত্তরে তরুর বাজার মন্দির থেকে দক্ষিণে খাল পর্যন্ত উঁচু করে ( জেলখানার মতো) সব দিক দিয়ে প্রাচীর তুলে দেন। প্রাচীরের মধ্যে আমাদের আটটি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আমাদের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা বাধ্য হয়েই মই বেয়ে চলাচল শুরু করি। দুই বছর পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের চলাচলের পথ দিয়েছেন।

ওই গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, গোপাল জয়ধর, শুখরঞ্জন জয়ধর, বসার ব্যাপারী, জাকির ব্যাপারী, ইজাবুল শেখ, খগেন বিশ্বাস, আয়েশা বেগম, দেবী বিশ্বাসের পরিবার প্রাচীরে মধ্যে অবরুদ্ধ। এছাড়া সদাই জয়ধরের পরিবার নির্যাতনের শিকার হয়ে ওই জায়গা ছেড়ে রাস্তার পাশে সরকারি জায়গায় বসবাস করছে। পরিবারগুলো এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।

অভিযুক্ত নুর ইসলামের ভাই ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, খালপাড় দিয়ে একটি পায়ে হাঁটা রাস্তা ছিলো। এ পথেই মানুষ যাতায়াত করতো। এ রাস্তা আমাদের জায়গার মধ্যে পড়েছে। আমরা আমাদের পুরো জায়গা জুড়ে প্রাচীর নির্মাণ করি। এখন মানুষের চলাচলের জন্য প্রাচীর ভেঙ্গে রাস্তা করে দিয়েছি। আমাদের জায়গার সামনে পানিউন্নয়ন বোর্ডের ৮০ ফিট জায়গা রয়েছে। এটি যাতে কেউ দখল করতে না পারে সে জন্য আমরা সেখানেও প্রাচীর দিয়েছি।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম মাহফুজুর রহমান বলেন, প্রাচীর ভেঙ্গে অবরুদ্ধ পরিবারগুলোর চলাচলের পথ বের করে দেয়া হয়েছে। এখন পরিবার গুলো নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছে।

তিনি আরো বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮০ ফিট জায়গাও প্রাচীর রয়েছে। এ জায়গা দখল মুক্ত করা হলে এলাকাবাসী আরো স্বাচ্ছন্দে চলাচল করতে পারবে। এ ব্যাপারে আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ২৪ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়েছি।

গোপালগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইফুদ্দিন বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার চিঠি পেয়েছি। দ্রুতই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমাদের জায়গা দখল মুক্ত করবো।