আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইভিএম নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ছবি : এফএনএস
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হলে সেটা হবে সংবিধান বিরোধী। আর এটা ব্যবহার করা হলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে মামলা করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইভিএম নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সেখানেই এসব কথা বলেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা।
সেমিনারে বলা হয়, ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে যদি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। কেননা সংবিধান বলা হয়েছে, ভোট সরাসরি হতে হবে। কিন্তু ইভিএম পরোক্ষ ভোট। পরোক্ষ ভোট হিসেবে ইভিএমে কীভাবে জালিয়াতি হতে পারে তার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
মঈন খান বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে শতকরা ৮০ বা ৯০ ভাগ ভোটও বিএনপির বাক্সে পড়তে পারে। কিন্তু আপনি যদি তার দুটো খুলে উল্টা করে দেন মেশিনের ভেতরে; আপনি টিপ দেবেন এ, রেকর্ড হবে বি-তে। টিপ দেবেন এ-তে, রেকর্ড হবে বি-তে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সব ভোট বিএনপিতে যাবে যা ১০ থেকে ২০ শতাংশ আর বিএনপির ৮০ শতাংশ দেখাবে আওয়ামী লীগের।’
অনুষ্ঠানে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘একজন নাগরিকের তাঁর ইচ্ছেমতো পছন্দমতো ভোট দেওয়ার অধিকার আছে। যে যন্ত্রটি তারা দেখেননি তাতে আঙুল স্পর্শ করলে তাদের ভোটটা হয়ে গেল, সেটা তারা বুঝতে পারবেন না, পারেন না।’
ইভিএম না ব্যবহার করার দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘এটা করতে দেওয়া হবে না। করতে দিতে পারবেন না। সংবিধান বিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী। মামলায় পড়বেন, জেলে যাবেন।’
আ স ম আবদুর রব আরো বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে আমাদের সেনাবাহিনী সমাদৃত। শান্তি রক্ষা করার জন্য, নির্বাচন করার জন্য। সেই সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করবেন ইভিএম দিয়ে?’
ইভিএমসহ আরো নানা ব্যাপারে অভিযোগ তুলে ধরা হয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত এই সেমিনারে। তবে সবধরনের প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ভোটের মাঠ ছেড়ে না দেওয়ার ঘোষণা আসে নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে যখন আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি, তখনো আমাদের অসংখ্য নেতা কারাগারে আছেন। আমাদের প্রার্থী হওয়ার উপযুক্ত যারা তাঁরা কারাগারে আছেন। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পথে পথে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করার পর তারা মনে করেছিল নিশ্চয়ই হুলস্থুল একটা কিছু করবে, নির্বাচন থেকে বাইরে রাখা যাবে। কিন্তু করতে পারেনি। এখন আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পর পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে তারা সবচেয়ে বেশি নির্ভর করত যাদের ওপর, সে সমস্ত দেশের কেউ কেউ, প্রতিবেশীরাসহ বলছে একটা কারচুপির নির্বাচন, প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আমরা আর নেব না।’
নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখতে না পারলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা চিহ্নিত হয়ে থাকবেন বলেও উল্লেখ করে ঐক্যফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ।