ঢাকা, এপ্রিল ২০, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৬:৪৭:০৮

এ পাতার অন্যান্য সংবাদ

একীভূত হতে চাওয়া ব্যাংকের সম্পদের দাম যেভাবে নির্ধারণ করা হবে টেলিভিশন ও অনলাইন সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি বিএফইউজে’র দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিএনপির মাথাব্যথার কারণ নেই : ওবায়দুল কাদের বিএনপি একটি রাজনৈতিক দৈত্যের দল : পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তি বজায় রাখার জন্য যা-যা করার আমরা করবো: বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবারের ঈদ যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট শিশুদের নতুন করে বাঁচার পথ খুলে দেয় : সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ আসন্ন পবিত্র রমজানে সরকারিভাবে বড় ইফতার পার্টি না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পুলিশকে জনগণের বন্ধু হয়ে নিঃস্বার্থ সেবা দেয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী

| ২৫ ভাদ্র ১৪২১ | Tuesday, September 9, 2014

রূপকল্প-২০৪১ এর ভিত্তিতে একটি উন্নত, সুশিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনের সোপান রচনায় বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৫-পরবর্তী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে আমরা আমাদের রূপকল্প-২০৪১ এর ভিত্তিতে একটি উন্নত, সুশিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনের সোপান রচনায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই কর্মযজ্ঞে নারী ও মেয়ে শিশুরা সব সময়ই আমাদের বিবেচনার অগ্রভাগে থাকবে।’

সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস- ২০১৪ উপলক্ষে আয়োজিত ‘নারী ও কন্যাশিশুদের সাক্ষরতা ও শিক্ষা: টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনকালে বাংলাদেশের এ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

জাতিসংঘ মহাসচিবের গ্লোবাল এডুকেশন ফার্স্ট ইনিসিয়েটিভের (জিইএফআই) সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার ও ইউনেস্কো এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি ইয়াং-ইয়ং ও চীনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স কিউ ইউ গাংঝু অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।

মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অটিজম বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল।

মেয়েশিশুদের শিক্ষা ও তাদের আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের পথের বাধাগুলো অপসারণে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি, উপযুক্ত শিক্ষাই একটি মেয়েকে সামাজিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি যেকোনো ধরনের অন্যায় ও বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস জোগাতে পারে।’

এ লক্ষ্যে নারী শিক্ষা ও সাক্ষরতাকে ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়ন প্রস্তাবনায় টেকসই উন্নয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে চিহ্নিত করে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শিক্ষিত জাতি গঠনে তার সরকারের দৃঢ় অবস্থানের পুনরুল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে তারা শিক্ষার অগ্রাধিকার প্রদান করে। নীতিগত ও অর্থায়ন উভয় ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদানের পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয় এবং শুরু হয় একটি গণসাক্ষরতা অভিযান।

জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার কেবলমাত্র ৫ বছরে সাক্ষরতার হার দ্বিগুণ করে ৬৫ শতাংশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়।’ তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘পরবর্তী সরকার ওই অর্জনগুলো ধরে রাখতে ব্যর্থ হয় এবং সাক্ষরতার হার ৪৪ শতাংশে নেমে আসে।’

প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা তহবিল গঠনের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা জানান, সেখান থেকে সরকার উচ্চশিক্ষার জন্য মেয়ে শিক্ষার্থীদের সহায়তা দেয়া হয়।

তিনি জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ে আইসিটিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে বহু স্কুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ রুম স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা থেকে এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

এছাড়া সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১ লাখ ৪ হাজার শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে নতুন অনেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং বৃত্তিমূলক কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার ওপর যথাযথ গুরুত্বারোপসহ শিক্ষাখাতের অধিকতর উন্নয়নে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

এর আগে গণশিক্ষায় বিশেষ সাফল্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও আলজেরিয়ার ৬ জনসহ ৭ প্রতিনিধির হাতে ইউনেস্কো সাক্ষরতা পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা মেয়ে শিশু ও নারী শিক্ষার উন্নয়নে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘পিস ট্রি’ (শান্তির বৃক্ষ) স্মারক উপহার দেন।

দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বিশ্বের ৩৬ দেশের প্রতিনিধি যোগ দেন। সূত্র: বাসস