ঢাকা: ‘নবমী নিশি যেন আর না পোহায়, তোকে পাবার ইচ্ছা মাগো কভু না ফুরায়, রাত পোহালেই জানি আবার হবে ভোর, আবার তোকে পাবো মোরা একটি বছর পর’ এমন মনোকামনায় আজ বৃহস্পতিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজার মহানবমী ও বিজয়া দশমী পালন করছে হিন্দু সমপ্রদায়। প্রতিমা বিসর্জন হবে শুক্রবার। দশভুজা দুর্গার আরাধনার পাশাপাশি দেবীকে বিদায় জানানোর আয়োজনে ভক্তকুল থাকবেন বিষণ্ন।
আজ মণ্ডপে মণ্ডপে প্রধান আকর্ষণ থাকবে আরতি প্রতিযোগিতা। রাতকে উজ্জ্বল করে ভক্তরা মেতে উঠবেন নানা ঢঙে আরতি নিবেদনে। একই সঙ্গে দিনভর চলবে চণ্ডীপাঠ। থাকবে ভক্তদের কীর্তনবন্দনা।
মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানায়, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৩৩ মিনিটের মধ্যে মহানবমী কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা হবে। আর সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দশমী বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জন হবে। আর এরই মধ্য দিয়ে শেষ হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান।
এ বছর নবমীও দশমী তিথি একই দিনে থাকায় শাস্ত্রীয় বিধান মেনে পূজার সব আনুষ্ঠানিকতা আজ শেষ হয়ে যাবে। অবশ্য আজ বিজয়া দশমী হলেও ভক্ত ও দর্শনার্থীরা সারা দিন রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমা দেখতে যেতে পারবেন। কারণ পূজা উদযাপন পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুসারে সারা দেশে প্রতিমা বিসর্জন হবে শুক্রবার।
শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের শুরু হয়েছিল। সনাতন হিন্দুদের ধর্মবিশ্বাস অনুসারে, দেবী দুর্গা তার সন্তানদের নিয়ে মর্ত্যে আসার জন্য মহালয়ার দিন যাত্রা শুরু করেন। আর বিজয়া দশমীতে সন্তানদের নিয়ে স্বর্গে ফিরে যান দেবী। এ বছর দেবী দুর্গা ঘোড়ায় মর্ত্যে এসেছিলেন, আর দোলায় করে ফিরে যাবেন।
বুধবার সারা দেশে মহা সমারোহে উদযাপিত হয়েছে দুর্গাপূজার মহাষ্টমী। রাজধানীর প্রধান পূজামণ্ডপগুলোতে ঢাকের বোল আর মানুষের উপচে পড়া ভিড় জানান দিয়েছে দুর্গোৎসবের সর্বজনীনতা। এদিন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে অনুষ্ঠিত হয় ‘কুমারী পূজা’। মাতৃভাবে কুমারী কন্যাকে জীবন্ত প্রতিমা করে তাতে জগজ্জননীর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করাই কুমারী পূজা।
রাজধানীর গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে গতকাল সকালে কুমারীপূজার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই ছিল ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড়। ভক্তরা ‘কুমারী দেবীর’ চরণে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে প্রাণিজগতের কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করেন। সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, সব নারীর মধ্যে মাতৃরূপের উপলব্ধি করতে কুমারীপূজার আয়োজন করা হয়।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বুধবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটের মধ্যে মহাষ্টমী বিহিত পূজা হয়। এরপর শুরু হয় সন্ধিপূজা। দুপুরে মন্দির মেলাঙ্গনে ভক্তদের মাঝে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।