আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কেবল ‘অসদাচরণ’ ও ‘অসামর্থ্যের’ কারণেই উচ্চ আদালতের বিচারকগণ অভিশংসনের সম্মুখীন হবেন; অন্য কোনো কারণে নয়। রোববার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুগ্ম জেলা জজ ও সমপর্যায়ের জুডিসিয়াল অফিসারদের ১২৪তম প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। ‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) বিল, ২০১৪’ সংসদে উত্থাপন করা হয় গত ৭ সেপ্টেম্বর। বিলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল থেকে সংসদের কাছে ন্যস্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিল পাস হলে শুধু বিচারপতিরাই নন, সাংবিধানিক পদের সবাই সংসদীয় অভিশংসনের আওতায় পড়বেন। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনার, সরকারি কর্মকমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষকসহ সাংবিধানিক পদের সবাইকে অপসারণের ক্ষমতা পাবে সংসদ। এ প্রসঙ্গে আনিসুল হক বলেন, ‘সংসদের অভিশংসন ক্ষমতায় বিচারকদের স্বাধীনতা মোটেই প্রভাবিত হবে না। বরং এতে বিচার বিভাগের সম্মান ও স্বাধীনতা সুনিশ্চিত হবে। অভিশংসনের যাতে অপব্যবহার না হয়, সেজন্য আইনে অসদাচরণ ও অসামর্থ্যের সংজ্ঞা নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকবে।’ সংবিধান ও আইন অনুযায়ী প্রত্যেক বিচারকই স্বাধীন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিচারক অপসারণের বিষয়ে সংবিধান অনুসারে আইন করা হবে। আইনে অভিযুক্ত বিচারককে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট সব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলার প্রতিটি পর্যায়ে বিচারকগণ সততা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও আন্তরকিতার সঙ্গে আইনানুগভাবে দায়িত্ব পালন করলে জনগণের প্রত্যাশিত স্বল্পসময়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। বিচার বিভাগের প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থাও বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।’ ন্যায়বিচারের দ্বার সর্বস্তরের বিচারপ্রার্থীদের জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত থাকে এবং কেবলমাত্র বিত্তবানদের জন্য যেন সীমাবদ্ধ না থাকে, সে ব্যাপারে বিচারকদের সচেষ্ট থাকারও আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী। বিচার প্রশাসন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন আইন সচিব এএসএমএস জহিরুল হক।