নিচের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে আটকে গেলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চতুর গাউছুল আজম।
গতকাল বিকেলে তার অফিসে কয়েকজন সাংবাদিককে ডেকে নিয়ে মতবিনিময় করে অবশেষে তার গড়া পুলিশের বিকল্প ‘বিচ্ছু বাহিনী’ তুলে নেয়ার ঘোষনা দেন। সে সভায় তিনি নানা ভাবে তার অপরাধ অন্যের ঘাড়ে চাপানো চেষ্টা করেন। কড়িৎকর্মা এই আমলা ইনিয়ে-বিনিয়ে নানা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তার কর্মকান্ডকে ছহি বলে প্রমান করার চেষ্টা করেছেন। অপকর্মের দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছেন অন্যের ঘাড়ে। আমরাও আগে থেকে এমনটিই ভেবেছিলাম। তিনি যা বলেন তা করেন না। আর যা করেন তা বলেন না। বেশি চালাক হলে যা হয়। আসলে তিনি ‘অনেক চালাক’! তিনি বিগত সময়ে একটি নিউজ পোর্টলকে পূঁজি করে তাদেরকে দিয়ে তার নানা গুণকির্তন করিয়েছেন। কোন অপারেশন শেষ করার পরই তিনি তার শ্বশুর বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে প্রাপ্ত মোবাইল ফোনটি দিয়ে ছবি তুলে তার খয়ের খা’দের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। আর মোবাইল ফোনে বলে দিতেন, কিভাবে অপারেশনটি পরিচালিত হয়েছে। কাদের কাদের আটক করা হয়েছে। কি সাজা দেয়া হয়েছে। যে যন্ত্রটি তার হতে রয়েছে সেই ধরনের অনেক যন্ত্রই এখন দেশের কোটি কোটি মানুষের হাতে রয়েছে। সে ধরনের যন্ত্রটি কাজে লাগিয়েই জনগণ ইউএনও গাউছুল আজমের কয়েকটি ছবি ও কথোপকথন আমাদের কাছে গতকাল পৌছে দিয়েছেন। যা দেখে ও শুনে সত্যিই লজ্জা পেতে হবে যে কোন কান্ড জ্ঞান সম্পন্ন মানুষের।
কোরবানীর ঈদের আগের শনিবার তিনি গিয়েছিলেন শহরের ১নং রেল গেইট এলাকার আবাসিক হোটেল ফাতিন বন্ধ করতে। ওই সময় রেল লাইনের পাশে কোরবানীর পশু জবাই ও মাংশ ছড়ানোর ছুড়ি ও কাচি বিক্রি করছিল দোকানীরা। ওই সময় গাউছুল আজম সেই দোকান থেকে একটি বড় ছোড়া হাতে তুলে নিয়ে আবাসিক হোটেলের মালিকদের খুঁজতে দেখা যায়। ওই সময় এই দুর্লভ দৃশ্যটি মোবাইল ফোনে বন্ধী করে রেখেছেন ওই এলাকার জনৈক দোকানী। গত মঙ্গলবার সকাল বার্তা প্রতিদিনে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর জনাব গাউছুল আজম এসএমএস করে দাবি করেন, তিনি অভিযানে লোহার রড় নিয়ে যাননি, কাউকে আঘাতও করেনি। তিনি সত্যি কথাই বলেছেন। তিনি লোহার রড নিয়ে অভিযানে যাননি, তবে লোহার ছোড়া নিয়ে গেছেন। আর ওই সময় তিনি হোটেলে মালিকদের উদ্দেশ্যে যে সব নোংড়া ভাষা ব্যবহার করেছেন তা শুনে রীতিমত লজ্জা লেগেছে। যাক সেসব কথা। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন। উচ্চতর ডিগ্রী নিয়েছেন। বিসিএস করেছেন। চাকরী করছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। মাত্র কয়েক বছর পর তিনি এডিসি হবেন, ডিসি হবে ইত্যাদি। গুণীজন খারাপ বললেও ধরে নিতে হবে এটা উনার শিক্ষার গুণ। এটা হয়ত জনগনের জন্য কোন মঙ্গল বয়ে আনবে!
গত মঙ্গলবার সকাল বার্তা প্রতিদিনে প্রকাশিত সংবাদে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ছিলো। সে সব প্রশ্নের মধ্যে জনাব গাউছুল আজম একটির উত্তর দিয়েছেন আর কোনটিই উত্তর দেনটি। আমাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল ‘ভ্রাম্যমান আদালত শহীদ মিনারে সিগারেট পান করার অপরাধে ধৃতদের জরিমানা করেন। তারপর অভিযুক্তদের দিয়ে শহীদ মিনার ঝাড়– দেয়ানো কাজ করান, এটা কোন আইনে আছে? মাদক বিক্রি বা সেবনের অপরাধে জেল ও জরিমানা করার পরও অভিযুক্তদের দিয়ে মাটি কাটানো হয়। এটাও কোন আইনে। যদি কোন আইনে থাকে তাহলে আইনের কোন বই আছে, কত নম্বর ধারায়?
দয়া করে এসব প্রশ্নে সঠিক জবাব দিলে আমরা আর এসব ব্যাপারে প্রশ্ন তুলব না। আর যারা অন্য পেশা থেকে এসে মৌসুমী পাখি হয়েছেন সাংবাদিকতার লেবাস লাগিয়ে নানা অপকর্ম করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, দয়া করে কারো চামচামি করবেন না। পারলে সঠিক সংবাদ পরিবেশন করুন তা না হলে জনগণ একদিন এর বদলা নেবে।